ePaper

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সোনার দাম ছাড়ালো ৪ হাজার মার্কিন ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন সুদের হার কমতে পারে এবং মার্কিন সরকারের অচলাবস্থার উদ্বেগের কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনায় বিনিয়োগ করায় বুধবার প্রথমবারের মতো সোনার দাম আউন্সে ৪ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।ঐতিহ্যগতভাবে, স্বর্ণকে নিরাপদ আশ্রয় বা ‘সেফ হেভেন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতি, কিংবা অস্থিরতার সময় মানুষ এর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই কারণে, মার্কিন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা এবং সরকারি অচলাবস্থা সোনার দাম বৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া দেশটির শেয়ারবাজারের কিছু অংশের মূল্য যখন অনেক বেশি মনে হচ্ছে এবং যেকোনো সময় তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, তখন বিনিয়োগকারীরা সেই বাজার ছেড়ে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ সম্পদ যেমন সোনার দিকে ঝুঁকছেন। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক সংকটসহ নানা উদ্বেগের কারণে ব্যবসায়ীরা সারা বছর ধরে সোনায় বিনিয়োগ করছেন। এর ফলে, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মূল্যবান এই ধাতুর দাম ৫০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে। এই সপ্তাহে ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতাও সোনায় বিনিয়োগের আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ-এর সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করে দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানাতে অনুরোধ করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি করে সোনা বা ‘নিরাপদ আশ্রয়’ সম্পদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তার সময়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত সোনা, বুধবার ৪,০০৬.৬৮ মার্কিন ডলারে তার সর্বোচ্চ দরে আরোহণ করে। এদিকে, আরেক মূল্যবান ধাতু রূপাও রেকর্ড দর থেকে মাত্র কয়েক ডলার নিচে অবস্থান করছে। এই প্রবণতা বাজারের অস্থিরতা এবং এসবে ব্যাপক বিনিয়োগের ইঙ্গিত দেয়। মার্কিন সরকারের কিছু অংশ বন্ধ থাকার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্বস্তি আরও বাড়ছে। চাকরির বাজার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্তসহ অন্যান্য তথ্য প্রকাশ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ফেডারেল রিজার্ভের জন্য তাদের সুদের হারের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই ডেটা বা তথ্যের অনুপস্থিতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করে তোলায়, সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে বা অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *