বিশেষ প্রতিবেদক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি। এমনকি তাদের রেজিস্ট্রশনও স্থগিতও করা হয়নি। শুধুমাত্র তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে জিটিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক মেহদি হাসানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় তারা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারবে না। তারা একটি দল হিসেবে বৈধ কিন্তু তাদের কার্যক্রম কিছু সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। যেকোনো সময় তাদের কার্যক্রম সচল করা যেতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ব্যাখ্যা দিতে পারবে। তারা বলতে পারবে নির্বাচনে কোন দল অংশ নিতে পারবে। কারণ তারা নির্বাচন অনুষ্ঠান করছে। সুতরাং তারাই ভালো বলতে পারবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের লাখ লাখ সমর্থক আছে এটা আমি মানি না, তবে তাদের সমর্থক আছে। তাদের সমর্থকরা সাধারণ ভোটারের মতোই ভোট প্রদান করতে পারবে। তবে সেখানে শুধু আওয়ামী লীগের প্রতীক থাকবে না। ড. ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের রাজনৈতিক দল বললেও তারা রাজনৈতিক দলের মতো নিজেদের তুলে ধরতে পারেনি। তারা মানুষ হত্যা করেছে। এমনকি তারা যা করেছে তার কোনো দায় পর্যন্ত তারা নেয়নি। শুধু তাই নয়, তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য তারা সব সময় অন্যকে দোষারোপ করেছে। সোমবার প্রকাশিত এ সাক্ষাৎকারে আরও আলোচনায় উঠে আসে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বের যৌক্তিকতা, রোহিঙ্গা সংকট ইত্যাদি বিষয়।
অনেকে বলছে ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকুন: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অনেক মানুষ বলছে ৫ বছর ক্ষমতায় থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন। মানুষ এই ধরনের কথা বলছে। তারা বলছে আপনি ক্ষমতায় থাকুন। নির্বাচনের কি দরকার? অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে থাকে, কিন্তু বাংলাদেশে কেন ১৮ মাস সময় লাগছে-এমন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে জিটিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক মেহদি হাসান প্রধান উপদেষ্টাকে এ প্রশ্নটি করেন। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে জিটিও। সাক্ষাৎকারে আরও কিছু বিষয়ে কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস। এর মধ্যে ছিল জাতীয় নির্বাচন দেরিতে হওয়ার যৌক্তিকতা, রোহিঙ্গা সংকট ও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়। ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হন শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে তাকে বেছে নেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তা মেনে নিয়েছিলাম। সে সময় আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, আপনারা যদি এত কিছু ত্যাগ করতে পারেন, তবে আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলাব।
আ.লীগের কার্যক্রম যেকোনো সময় সচল হতে পারে : ড. ইউনূস
