ePaper

আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজে সর্বস্বান্ত হাজারো কৃষক


নিজস্ব প্রতিদেক
ষ্টিয়ায় আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে হাজারো কৃষক। বিঘাপ্রতি অর্ধলক্ষাধিক টাকা লোকসানের বোঝা বইতে গিয়ে অনেক কৃষককে হারাতে হচ্ছে চাষের জমি কিংবা হালের গরু। কৃষকদের অভিযোগ, মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুমকে সামনে রেখে সরকার দেশের বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করেছে। এতেই লোকসানে পড়তে হয়েছে তাদের। এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজে প্রতি বিঘায় কৃষকের খরচ গেছে লাখ টাকার ওপরে। রোপণ করার জন্য চাষিদের ছোট সাইজের পেঁয়াজ কিনতে হয় ৮ হাজার টাকা মণ। আকাশছোঁয়া দামের বীজ থেকে উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা মণ। তাছাড়া রোপণের পরপরই অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ফলনও নেমে এসেছে ৪ ভাগের ১ ভাগে।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছর এই সময় পেঁয়াজের মণ ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। অতিরিক্ত দাম হওয়ায় আমরা কিনেও খেতে পারিনি। তাই দুই পয়সা লাভের আশায় ৮ হাজার টাকা মণ হলেও বীজ কিনে পেঁয়াজ চাষ করেছি। আমার এক বিঘা ৪ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ হয়েছে মাত্র ৩২ মণ। অন্তত ৮০ হাজার টাকা লোকসান হবে।
ওই এলাকার শারমীন আখতার নামের এক চাষি বলেন, সরকার আমাদের বিপদে ফেলে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আনছে। আমরা চাষ করলেই সেই জিনিসের দাম কমে যায়।
পেঁয়াজের দামে হতাশ এ অঞ্চলের কৃষকরা কয়েক দফা কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেছেন। তবে আশ্বাস দেওয়ার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি দাবি করে কামাল নামে একজন বলেন, শুনছি বিদেশি পেঁয়াজে বাজার সয়লাব। ক্রেতারাও কম দামে পেঁয়াজ পেয়ে খুশি। কিন্তু আমাদের দুঃখ-কষ্টতো সরকার বুঝতে পারে। কেউ কোনো খোঁজ নিচ্ছে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলছেন, সব কৃষক সমান ক্ষতির মুখে পড়বে না। যদি ফলন স্বাভাবিক হয়, তাহলে দাম কিছুটা কম হলেও ক্ষতি বেশি হবে না। তিনি বলেন, মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার যেসব কৃষক আগাম পেঁয়াজ চাষ করেছেন, তাদের পেঁয়াজ বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও ১৫-২০ দিন পরে যাদের পেঁয়াজ উঠবে তারা ফলন ও দাম ভালো পাবেন বলে আশা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *