জুয়েল চৌধুরী
চুনারুঘাট উপজেলায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের সময় উপজেলা সহকারী কমিশনারের ওপর হামলা চেষ্টার ঘটনায় কথিত এক ‘সমন্বয়কে’ গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল বুধবার ভোরে উপজেলার উবাহাটা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম। গ্রেপ্তার ফরহাদ ইবনে রুমি (২৮) ওই এলাকার দিদার হোসেনের ছেলে। তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বলে পরিচয় দিতেন। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন চুনারুঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম মাহবুব। এ সময় ফরহাদ সহকারী কমিশনারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এক পর্যায়ে ফরহাদ লাঠি নিয়ে তার ওপর হামলার চেষ্টা করেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে শাহজিবাজার সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন আরাফি তাজোয়ার আমিন ১৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি দল অভিযান চালিয়ে ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে। তাকে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। পুলিশ জানায়, কয়েক বছর আগে ফরহাদ ও তার লোকজন উপজেলার উবাহাটা মৌজার খাস খতিয়ানের আনুমানিক ২০ ফুট রাস্তা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করেন। দখল করা জায়গাটি স্থানীয় মো. বাবু মিয়ার ১২ শতাংশ জমির সম্মুখ ভাগে পড়েছে। ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবু মিয়া হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফরহাদ ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলায় করেন। পরে ওই রাস্তা দখলমুক্ত করতে বাবু মিয়ার পক্ষে আদেশ দেয় আদালত। আদেশের পর উপজেলা সহকারী কমিশনার মাহবুব উচ্ছেদ করতে গেলে ফরহাদ বাধা দেয়। বাবু মিয়া বলেন, “ফরহাদ ও তার লোকজন এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমার জায়গাসহ রাস্তা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল।” এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম মাহবুব বলেন, আদালতের আদেশে ওই স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ফরহাদ সরকারি কাজে বাধা দিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকাবাসী জানান, ফরহাদ এতদিন যুবলীগের পরিচয় দিলেও ৫ অগাস্টের পর থেকে নিজেকে সমন্বয়ক বলে দাবি করেন। তিনি এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ওসি নুর আলম বলেন, বাবুল মিয়ার করা মামলায় ফরহাদকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।