রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষক এখন চিনা বাদাম তোলায় ব্যস্ত। এবার বাদামের ফলন বেশি ও বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। লাভজনক এ চাষাবাদে তাই ঝুঁকছেন কৃষকরা। এবার উপজেলার খাষকাউলিয়া, স্থলচর, সৌদিয়াচাঁদপুর, উমারপুর, ঘোড়জানসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে বাদাম চাষ বেশি হয়েছে। বাদাম চাষে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শ পাচ্ছেন এসব অঞ্চলের কৃষকরা। চাষিদের মাঝে উন্নত জাতের ঢাকা-১, ঢাকা-৪, বাড়ি চিনা বাদাম বিতরণ করে কৃষি বিভাগ। এতে স্থায়ী জাতের চেয়ে অধিক ফলনও পেয়েছেন তারা। স্থানীয় কৃষিবিদরা জানান, চরাঞ্চলে বাদাম চাষে অল্প কীটনাশক ও কম খরচে বাদাম চাষ করা সম্ভব। এতে বাড়তি সেচ ও পরিচর্যার কোনো প্রয়োজন হয় না। কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় বাদাম চাষে আগ্রহও বেশি দেখাচ্ছেন কৃষক। এছাড়াও চরাঞ্চলের মাটিতে অধিক তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত সূর্যের আলো ও মাঝারি বৃষ্টিপাত পেলে চীনাবাদাম ও দেশীয় জাতের বাদামের ফলন ভালো হয়। উপজেলার খাষপুখুরিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন তিনি। একটা গাছে প্রায় ৯০টি বাদাম অর্থাৎ ১৮০টি দানা হয়েছে। লোকমান ও বারেক মোল্লা বলেন, বর্তমানে বাদাম ৩ হাজার ৮শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। অন্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষে এখন খরচ কম, লাভ বেশি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর রবি মৌসুমে বাদামের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯৮০ হেক্টর। অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি। এ পর্যন্ত কর্তন হয়েছে ২ হাজার ৯৭৭ হেক্টর জমি। অর্জন হেক্টর প্রতি ১.৭ থেকে ১.৮ মেট্রিক টন। এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. সাব্বির আহমেদ সিফাত জানান, চরাঞ্চলে কৃষকদের বাদাম চাষাবাদে সবধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ৫শ’ কৃষকের মাঝে বাদাম বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এ বছর চরাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৫ মণ বাদাম উৎপাদিত হয়েছে। লাভজনক বাদাম চাষ আরও বৃদ্ধি করতে চাষিদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।