মো. তাসলিম উদ্দিন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সরাইল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামে অনলাইন জুয়া খেলা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্কুল-কলেজে পড়য়া শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকে পড়ছে এই অনলাইন জুয়ায়। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে চলে এসব জুয়ার আসর। মোবাইল ফোনে অনলাইন জুয়ার অ্যাপস ডাউনলোড করে সেই অ্যাপসের লিংক অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে চালানো হয় জুয়া। তথ্য গেটে জানা যায়, ওয়ানএক্সবেট, বেটবাজডট ৩৬৫, ক্রিকেক্স, বেট৩৬৫এনআই ও মসবেটসহ বিভিন্ন জুয়ার সাইটে টাকা পাচার হচ্ছে। প্রথমে অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে শুরু করে খেলা। এক পর্যায়ে লোভে পড়ে খোয়াচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এদিকে দেশে নতুন আতঙ্কের নাম অনলাইন জুয়া। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে জুয়া খেলা বহু পুরনো এবং প্রচলিত এক প্রকার অবসর-বিনোদনের মাধ্যম। প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের সঙ্গে জুয়ার অন্যান্য মাধ্যমের চেয়ে অনলাইন জুয়াতেই এখন মানুষের অংশগ্রহণ বেশি। এক ধরনের কৌতূহল থেকে তরুণ প্রজন্ম আকৃষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন জুয়ার সাইটে। অনলাইন জুয়াড়িদের থেকে জানা যায়, বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইট পরিচালনা করছে বাংলাদেশের এজেন্টরা। মাঠে-ঘাটে, হাট-বাজারে এমনকি পাড়ার চায়ের দোকানে একপ্রকার প্রকাশ্যেই বসে অনলাইন জুয়ার আসর। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নেই কোনো সুনিদ্দিষ্ট তথ্য। শুধু তাই নয় সদর ইউনিয়নের এক যুবক নাম না বলার শর্তে বলেন, অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে তার দোকানঘর বিক্রি করেছে এবং তার জমি ছিল প্রায় দশ কাঠা সেই জমিও বিক্রি করেছে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে চলছে। কিছুদিন আগের কথা, সরাইল উপজেলার অনেক ব্যবসায়ী এবং অনেক যুবক থেকে অনলাইন নামক জোয়ারীরা টাকা নিয়ে অ্যাপস বন্ধ করে দেয়। অনেকের টাকা এভাবে মেরে দিয়েছে। এই অনলাইন জুয়ার থাবা ছড়িয়ে পড়েছে সমাজের সর্বত্র তাই সমাজের সকলকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং পরিবারের সদস্যদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সন্তানরা কোথায় কখন কিভাবে কি করছে মোবাইলে কতটুকু সময় দিচ্ছে এবং সামাজিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই হয়তো বা রোধ করা যেতে পারে এই জুয়ার ভয়াবহ থাবা। মানুষকে শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক সবদিক থেকেই পুঙ্গ করে মেরে ফেলার মতো মানববিধ্বংসী এই মোবাইল জুয়া কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। তাই সচেতনতার পাশাপাশি প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ। এ ব্যাপারে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো.রফিকুল হাসান বলেন, ঘরে বসে তারা মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে। আমাদের কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে আমি শুনেছি অনলাইন জুয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। আমরা চেষ্টা করছি এজন্টেদেরকে ধরতে। তাদেরকে ধরতে পারলে অনলাইন জুয়ার প্রসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, জুয়ার বিষয়ে সরাইল থানার পুলিশ সজাগ রয়েছেন।