নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতের ওপর বেশি নির্ভর ছিল। আমরা কারও সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সর্ম্পক চাই না। কারও সঙ্গে ভাই-বোন সর্ম্পক চাই না। আমরা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে ইকোনোমির গ্রোথ চাই।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের বিস অডিটোরিয়ামে ‘গণ-অভ্যুত্থান উত্তর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি : নতুন দিগন্তের সন্ধান’ জাতীয় নাগরিক কমিটির দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পরে নেপাল, ভূটান, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশ আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা ইনভেস্ট করতে চায়। প্রফেসর ড. ইউনূস সব জায়গায় গিয়ে রিকোয়েস্ট করছে যে, বাংলাদেশে ইনভেস্ট করেন। কিন্তু বাংলাদেশে যারা ইনভেস্ট করবে তারা সাইডলাইনে বসে আছে। তারা অপেক্ষা করেছে ভবিষ্যতে ভোটের মাধ্যমে কোন সরকার আসবে? পলিসি কী হবে? সেই পলিসিগুলো তারা দেখতে চায়। সেই পলিসির ওপর ভিত্তি করে তারা ইনভেস্ট করবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত আমাদের চারদিকে ঘিরে রেখেছে। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। কারণ, হাসিনা সেখানে বসে আছে। হাসিনা সেখানে বসে থেকে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক কথা বলছে। সেই কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সর্ম্পক অবনতির দিকে যাচ্ছে।
শামা ওবায়েদ বলেন, আমাদের বর্ডার যারা সুরক্ষা করবে তাদেরকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে কোনো ফরেন পলিসি ছিল না। যারা বর্ডার রক্ষা করবে তাদেরকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। গত ১৫ বছর বাংলাদেশে একটা ফরেন পলিসি ছিল, লুটপাত করার পলিসি। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য দুর্নীতি করে র্যাব, বিজিবিসহ সব প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির ফরেন পলিসি খুব ক্লিয়ার। শহীদ জিয়ার একটি ফরেন পলিসি ছিল। কেউ বলছেন- কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। অবশ্যই এখন কারও সঙ্গে শত্রুতা করে লাভ নেই। এখন গ্লোবাল পলিটিক্স হয়ে গেছে ইকোনমি নির্ভর। আমাদের সঙ্গে ভারতে সর্ম্পক হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। আমাদের দেশের মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা করে সেই সর্ম্পক করতে হবে।
বিএনপির এই নেত্রী বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান সার্ক যখন করেছিলেন তখন একটা ভিশন নিয়ে করেছিলেন। এই রিজিওনের কানেক্টিভিটি, এই রিজিওনের মানুষের উন্নয়ন, এখানে সব জনগণের কথা চিন্তা করে তিনি সার্ক করেছিলেন। সেই সার্ক হাসিনার কারণে, ভারত-পাকিস্তানের সমস্যার কারণে আটকে ছিল। এই সার্ককে আমাদের ব্যবহার করতে হবে। ভোট যতদিন না হবে ততদিন এই ষড়যন্ত্র চলতে থাকবে।
শামা ওবায়েদ অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্টের পরে ভারতের মিডিয়ায় যেভাবে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে, সংখ্যালঘু নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে, আমি মনে করি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হয়েছে এটার প্রতিবাদ দিতে, ব্যর্থ হয়েছে এটার জবাব দিতে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হয়েছে দিল্লির সঙ্গে সমঝোতা করতে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যখন মিথ্যা কথা হবে তখন তো ফরেন মিনিষ্ট্রিকে আগে তুলে ধরতে হবে।