ePaper

রংপুরের আলদাতপুরে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

শরিফা বেগম শিউলী

স্টাফ রিপোর্টার

রংপুর জেলা গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে পারভেজ হোসেন (২৫) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুরের দিকে আলদাতপুর কাচারীপাড়া বড় ক্যানেল সংলগ্ন পানক্ষেতের পাশে এ যুবকের লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মৃতের মা বাদী হয়ে ১৫ ফেব্রয়ারি গঙ্গাচড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১৫/৬৭ মামলা সূত্রে ও মৃত পারভেজের মা বলেন, আমার ছেলে পারভেজ হোসেন রাজ মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাইতো। কিন্ত গত ১২/০২/২০২৫ তারিখে আনুমানিক রাত ৯টার পরে পারভেজসহ আমরা পরিবারের সকলে খাওয়া-দাওয়া করতে থাকি। এমন সময় আমার ছেলের মুঠোফোনে এই (০১৩১৪-৪৯৯২৯১) নাম্বারে অপরিচিত এক নাম্বার থেকে ৮-৯ বারের মতো কল আসে।  পারভেজ তড়িঘড়ি করে খাওয়া শেষ না করে কলটা রিসিভ করে কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে চলে যায়। সারারাত ও সকাল পর্যন্ত অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও পারভেজের কোন খোঁজখবর পাই না। পরের দিন দুপুর বেলা লোকমারফতে জানতে পারি পাশের এলাকায় আমার ছেলে লাশ পাওয়া গেছে। সেখানকার গ্রাম্য পুলিশ থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে মৃত পারভেজের পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় লোকজনসহ লাশটি সুরতহাল করে লাশের কোমড়ের উপরে বাম পাশে ও পায়ে লো জখমের দাগ ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করা ক্ষত চিহ্ন আছে। একই সময়য়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে লাশটি উদ্ধারপূর্বক লাশের প্যান্টের ডান পকেটে থাকা পারভেজের মোবাইল ফোনটি জব্দ করে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে গংগাচড়া মডেল থানায় লাশ নিয়ে যায় এবং পরের দিন সকালবেলা ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়ে দেয়। পরে লাশ চাক করে আমাদেরকে দিলে আমরা লাশ দাফন করি। আমি সরকারের কাছে বিচার চাই। যারা আমার পারভেজকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলছে আমি তাদের বিচার চাই। আমি তাদের ফাঁসি চাই।  এই বিষয়ে সুমন ইসলাম বলেন, আমি পারভেজের লাশ দেখেছি। ওর পায়ে তিনটা রড দিয়ে বাড়ি মারা চিহ্ন আছে। আমার মনে হয় পারভেজকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি চাই সঠিক ভাবে তদন্ত করে পারভেজ হত্যার  সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি। স্থানীয় শ্রী অনিল চন্দ্র রায় জানান, লাশ যেখানে পড়ে ছিল তার পাশের জমিটা আমার। আমি সেইদিন দুপুরের দিকে তামাক ক্ষেতে পানি দিতে গেলে দেখতে পাই একটা মানুষের লাশ পড়ে আছে। তখন আমি লাশ লাশ বলে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন চলে আসে। যেভাবে লাশটা দেখেছি মনে হয় পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে।স্থানীয় গ্রাম্য পুলিশ সুনিল চন্দ্র রায় জানান, আমি লাশটাকে দেখেছি। পুলিশ যখন লাশটার শরীর চেক করে তখন আমি উপস্থিত ছিলাম। তখন আমি দেখেছি লাশের পিঠে অনেক বড় একটা জায়গা কালো ও পায়ে ক্ষত দাগ আছে। এ বিষয়ে জানার জন্য বেতগাড়ী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার পরেশ চন্দ্র রায়কে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, আমি বেশ কয়েকদিন থেকে বাহিরে আছি। এলাকা থেকে আমাকে ফোন দিয়েছিল তাতেই জানতে পেরেছি। উত্তর খলেয়ার একজন মারা গেছে। তার শরীরে কারেন্ট শট খাওয়ার কোন চিহ্ন ছিলোনা। এই মৃত্যুটা একটু সন্দেহ জনক অনেকে বলেছে।  এ বিষয়ে জানার জন্য গংগাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরানকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, পারভেজের মা বাদি হয়ে হত্যা মামলা করেছে। মামলাটির তদন্ত চলমান আছে। পোষ্টমডেম রিপোর্ট হাতে পেলে মামলা কার্যক্রম শুরু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *