ePaper

ভারতে ফেরিতে নৌবাহিনীর স্পিডবোটের ধাক্কায় ১৩ জন নিহত, নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে অভিযান

ভারতে ফেরিতে নৌবাহিনীর স্পিডবোটের ধাক্কায় ১৩ জন নিহত, নিখোঁজ যাত্রীদের খোঁজে অভিযান
ভারতে ফেরিতে নৌবাহিনীর স্পিডবোটের ধাক্কায় ১৩ জন নিহত, নিখোঁজ যাত্রীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে

ভারতে ফেরিতে নৌবাহিনীর স্পিডবোটের ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং এক শিশুসহ দুই যাত্রী নিখোঁজ হয়েছে। মুম্বাই উপকূলে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ফেরিটি ডুবে যাওয়ার ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চলছে। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে মুম্বাইয়ের কারাঞ্জা এলাকায় নৌবাহিনীর পরীক্ষামূলকভাবে চালানো একটি স্পিডবোট নীল কমল নামক বেসরকারি মালিকানাধীন ফেরিটিকে ধাক্কা দেয়, যার ফলে ফেরিটি ডুবে যায়।

দুর্ঘটনার বিস্তারিত এবং নিহতের সংখ্যা

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোস্টগার্ড এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন এবং এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, নিখোঁজ দুই যাত্রীর সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চলছে।

নৌবাহিনীর স্পিডবোটের পরীক্ষা এবং দুর্ঘটনা

নৌবাহিনীর স্পিডবোটটি নতুন ইঞ্জিন সংযুক্ত করে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছিল। স্পিডবোটে ছিলেন ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী কোম্পানির চার সদস্যসহ মোট ছয় ব্যক্তি। অন্যদিকে, ফেরিটি যাত্রীদের নিয়ে গেটওয়ে অব ইন্ডিয়া থেকে এলিফ্যান্টা আইল্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে স্পিডবোটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরিটিকে ধাক্কা দেয়।

নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান

ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে উদ্ধারকারীরা তল্লাশি অভিযান শুরু করেছেন। মুম্বাই কোস্টগার্ড এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল নিখোঁজ যাত্রীদের অবস্থান শনাক্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসন এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

প্রাথমিক তদন্ত এবং আইনি পদক্ষেপ

নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনাটির সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য একটি তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তদন্তে স্পিডবোটের ইঞ্জিন বিকল হওয়া, অন্য কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা মানবিক ভুলের কারণ অনুসন্ধান করা হবে। এ ঘটনায় ফেরির এক যাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বাই পুলিশ একটি এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) দায়ের করেছে।

ভারতের সড়ক ও নৌ পরিবহন নিরাপত্তা: ঝুঁকি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

ভারতে নৌবাহিনীর এই দুর্ঘটনা সড়ক এবং নৌ পরিবহন নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। এই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষত পরীক্ষামূলকভাবে চালানো স্পিডবোটগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ইঞ্জিনের সঠিক মানদণ্ড যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা। এর পাশাপাশি, নিরাপদ নৌযান পরিচালনা এবং যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান উঠেছে।

সংকটময় পরিস্থিতি এবং জনগণের উদ্বেগ

এ ধরনের দুর্ঘটনা মানুষের জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষত যেখানে সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিয়মকানুনের অভাব রয়েছে। সরকার এবং নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের উচিত আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা কমে আসে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারে।

উদ্ধার কাজ এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপ

এখনো নিখোঁজদের উদ্ধার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছে। ভারতের নৌ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নৌপরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি সাধন, পাশাপাশি পরীক্ষামূলক নৌযান চালানোর ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Share Now

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *