ভারতের অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা উচিত, এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই আহ্বান জানান। তিনি সীমান্ত হত্যাকে অমানবিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পরিপন্থী উল্লেখ করে বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হলে দুই দেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন হবে।”
সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএনপির দাবির পুনরাবৃত্তি
বিএনপি সব সময়ই সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “সীমান্ত হত্যা শুধু মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে না, এটি আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং মানবাধিকারের ওপর আঘাত হানছে। ভারতের উচিত এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।”
সিলেটে মির্জা ফখরুলের সফর
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সিলেট সফরে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পাশাপাশি সিলেটের দুই পবিত্র মাজার, হযরত শাহজালাল (র.) এবং শাহপরান (র.)–এর মাজার জিয়ারত করেন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।
সীমান্ত হত্যার ভয়াবহতা
সীমান্ত এলাকায় হত্যার ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চলমান। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গত এক দশকে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ গ্রামবাসী, যারা চোরাচালান কিংবা কৃষিকাজের জন্য সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত করতেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা বারবার কূটনৈতিকভাবে এই ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করার দাবি জানিয়েছি। এটি বন্ধ করার জন্য ভারতকে কেবল আন্তর্জাতিক চাপে নয়, মানবিকতার দিক থেকেও উদ্যোগ নিতে হবে।”
বিএনপির অবস্থান
বিএনপির মতে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার পূর্বশর্ত। মির্জা ফখরুল সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “এই ইস্যুতে বর্তমান সরকারের নীরবতা জনগণের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে। কূটনৈতিকভাবে সরকারকে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।”
উপসংহার
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর মধ্যে সীমান্ত হত্যা একটি জ্বলন্ত ইস্যু। মির্জা ফখরুলের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, এই বিষয়টি কেবল একটি রাজনৈতিক দাবি নয়, বরং মানবিকতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। দুই দেশের সুসম্পর্ক ও শান্তি বজায় রাখতে অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা জরুরি।
রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন: