চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বিপিসির অধীনস্থ’ প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে (এসএওসিএল) এর ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও অর্থ আত্মসাতে সহযোগিতার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। গত ৩ ই মার্চ ২০২৫ ইং দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম ১ এর সহকারী পরিচালক মা. রাজু আহমেদ নিজ কার্যালয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। মামলা নং- ০৪, তারিখ-০৩/০৩/২০২৫ খ্রি. মামলা নং- ০৫ তারিখ- ০৩/০৩/২০২৫ খ্রি:। আসামি হলেন এসএওসিএল্র ম্যানেজার (এডমিন) বেলায়েত হোসেন, সাবেক প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এবং বর্তমান ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) কামরুল হোসেন, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপক (হিসাব এবং বর্তমান উপ-ব্যবস্থাপক (নিরীক্ষা) আতিকুর রহমান, এমআই চৌধুরী এন্ড কোং (ডিটিজি) লিমিটেডের পরিচালক ফেরদৌস আরা, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফাইয়াজ ফারহান, নগরীর রাইফেল ক্লাব মার্কেটের ফেমাস ইলেক্ট্রিক এন্ড ইলেক্ট্রনিকের প্রোপাইটর হারিছ উদ্দিন, নগরীর সদরঘাটের দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসিন্দা নারায়ণ চক্রবর্তী ও তার স্ত্রী রীতা চক্রবর্তী। দুই মামলার একটির এজহারে বলা হয়, আসামিদের মধ্যে বেলায়েত, কামরুল, আতিকুর, ফেরদৌস আরা ও ফাইয়াজ পরস্পর যোগসাজসে ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে হারিছ নারায়ণ ও রীতা ২৬ লাখ টাকার পৃথক তিনটি চেক তাদের হিসাবে জমা করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতে অপরাপর আসামিদের সহযোগিতা করে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলার এজহারে বলা হয়, আসামি বেলায়েত হোসেন, কামরুল হোসেন ও আতিকুর রহমান পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণার মাধ্যমে ১২ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধে বেলায়েত হোসেন (কক্সবাজার এভিয়েশন অফিসে দায়িত্ব থাকাকালীন) কামরুল হোসেন (মোংলা অয়েল ইন্সটলেশন অফিসে দায়িত্ব থাকাকালীন) আতিকুর রহমান (রংপুর অফিসে দায়িত্ব থাকাকালীন) তিন কর্মকর্তারদের দুর্নীতির দায়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানে থেকে বিগত ২০১৮ সালে চাকরিচ্যুত করা হয়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বিপিস্রি সাবেক চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ ও এসএওসিএল এর সাবেক সিইও মনি লাল দাশ ও কোম্পানীর আইন উপদেষ্টা মেজবাহ উদ্দিনের যোগসাজশে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ৩ তিন কর্মকর্তারদের চট্টগ্রাম প্রধান কার্যালয়ে চাকরি যোগদান দেয়। গত ২০ মার্চ ২০২৫ ইং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস স্মারক নম্বর-০৫,০০,০০০০, ১৩০, ০৪.০২১.২০- ৩৫৩-২য় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটির ২০-০২-২০২৫ তারিখের ২য় সভার সিদ্ধান্তানুযায়ী তাঁর মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আওতাধীন দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা/ কর্মচারীগণের মধ্যে যাদের বিষয়ে জনমনে দুর্নীতিবাজ মর্মে ব্যাপক ধারণা রয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলেও এসএওসিএল প্রধান কর্মকর্তা সিইও ফেরদৌসী মাসুম হিমেল প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা হওয়ার স্বত্বেও তিন কর্মকর্তা কে স্ব স্ব পদে বহাল রেখেছেন গত ২৪ মার্চ ২০২৫ খ্রি. তারিখে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অফিস স্মারক নম্বর নং ২৮.০০.০০০০, ০০০, ০৪২.০৪.০০০৩. ২৪.১৩৮ দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক মামলা রুজু হওয়ায় বেলায়েত হোসেন, কামরুল হোসেন ও আতিকুর রহমান-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হলেও এসএওসিএল এর সিইও ফেরদৌসী মাসুম হিমেল তিন কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার
জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। গত ২৪ মার্চ ২০২৫ তারিখ বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া পরও চাকরি বহাল আছে এই ব্যাপারে বিপিসির চেয়ারম্যানের মতামত কি আমিন উল আহসান কাছে জানতে চাইলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। নিয়ম না মেনে চট্টগ্রাম প্রধান কার্যালয়ে যোগদান এবং দুর্নীতির মামলা হওয়ার পর চাকরি বহাল তবিয়তে আছে এই বিষয়ে এসএওসিএল এর বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিইও ফেরদৌসী মাসুম হিমেল কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিপিসি কর্তৃপক্ষ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান। এছাড়া বিপিসির উপ সচিব শাহীনা সুলতানার কাছে গত ২৪ তারিখ জ্বালানী মন্ত্রনালয় থেকে এস.ইউ.সিএল এর তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশ জারী করা হয়েছে কিনা। এবং এ ব্যপারে আপনার কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর মামলা নং- ০৪, তারিখ- ০৩/০৩/২০২৫ খ্রি. মামলা নং- ০৫, তারিখ- ০৩/০৩/২০২৫ খ্রি. স্ট্যান্ডার্ড
এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিমিটেড এর ৩ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার স্বত্বেও এসএওসিএল এর তিন কর্মকর্তা উক্ত পদে এখনো পর্যন্ত বহাল রয়েছে। এই বিষয়ে আপনার দপ্তরের গত ০৯/০৩/২০২৫ ইং তিন কর্মকর্তাদের সাসপেন্ড করার জন্য চিঠি দেওয়ার পর এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই বিষয়ে দুদকের সাথে আলাপ করলে দুদক উপ পরিচালক জানান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুদকে একটি মামলা রয়েছে। মামলা তদন্ত পূর্বক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।