সবুজ দাস, ফরিদপুর :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আজাদ ফরিদপুরে বলেছেন, নির্বাচন হলো সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমত প্রতিনিধি বাছাই করতে পারে। প্রতিনিধি বাছাই যদি সঠিক না হয় তাহলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে এবং কায়েম হবে ফ্যাসিবাদ। ফরিদপুরে লিডারশিপ ট্রেনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। গত শুক্রবার ফরিদপুর মুসলিম মিশনের সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। জামায়াতের ফরিদপুর অঞ্চলের মানবসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ফরিদপুর অঞ্চলের ৮২ জন প্রতিনিধি অংশ নেয়। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, আগামী নির্বাচনে এদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। এই নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে একটি কার্যকরী ভূমিকা রাখার জন্য প্রার্থীসহ সকলকে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। ‘প্রার্থী হল পার্টির প্রাণ’-মন্তব্য করে জামায়াত নেতা বলেন, প্রার্থীর প্রাণচঞ্চল্য এবং পরিচালনা কমিটির ভূমিকা পালনের মাধ্যমেই কেবল বিজয়ী হওয়া সম্ভব। সকলে যথাযথ ভূমিকা পালন করলেই কেবল আল্লাহর সাহায্যের মাধ্যমে বিজয়ী হওয়া সম্ভব। হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, নির্বাচন হলো সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমত প্রতিনিধি বাছাই করতে পারে। প্রতিনিধি বাছাই যদি সঠিক না হয় তাহলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে এবং ফ্যাসিবাদ কায়েম হবে। বিগত ১৫ বছরের তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে আমরা কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন করেছি। ২০১৪ সনের নির্বাচনে ১৫৩ জন প্রতিনিধি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়। এভাবেই এদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল রাতে ভোটের নির্বাচন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে অভিনব। সর্বশেষ ২০২৪ এ নির্বাচন ছিল আমি তুমি আর ডেমির ভাগাভাগির নির্বাচন। এজন্য আমরা আন্দোলন করেছি। হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, জনগণ উৎকণ্ঠিত ছিল ভবিষ্যতে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে। এরপর ছাত্রদের কোঠা সংস্কার আন্দোলনের পরিণতিতে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়। দেশের সব শ্রেণীর মানুষ এই আন্দোলনে জীবন দিয়ে আহত হয়ে ফ্যাসিবাদকে বিদায় করে। বর্তমানে এদেশের জনগণের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার ফ্যাসিবাদের বিচারসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন আকাঙ্খার সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও সহমত পোষণ করে। ‘৫৪ বছরের জঞ্জাল মুক্ত করে আগামীতে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে’-মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, এজন্য নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সকল স্টেক হোল্ডারদের বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলিরও ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় আমরা আবারো ফ্যাসিবাদের দিকে ফিরে যেতে পারে। জামায়াতের মানব সম্পদ বিভাগ ফরিদপুর অঞ্চল কর্তৃক আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অঞ্চল সহকারী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। সঞ্চালনায করেন জেলা আমীর মো. বদর উদ্দিন।