সৌমিত্র সুমন (পটুয়াখালী) কলাপাড়া
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা সমুদ্রবন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কুয়াকাটাকে ঘিরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে এ অঞ্চলের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় জমির দামও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভূমিদস্যুতা। উন্নয়নের স্বপ্ন দেখলেও দখলবাজদের দৌরাত্ম্যে স্থানীয় মানুষ ও বিনিয়োগকারীরা পড়েছেন চরম নৈরাশ্যে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ভূমিদস্যুরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে জমি দখল, ভুয়া মালিকানা দাবি ও মামলা টুকে চাঁদাবাজির মতো কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও বিনিয়োগকারীদের কার্যক্রম। অভিযোগ রয়েছে, ভূমিদস্যু চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে রাখাইন সম্প্রদায়ের কিছু অসাধু ব্যক্তি। তারা পূর্বপুরুষদের বিক্রিত জমিতে পুনরায় মালিকানা দাবি করছে অথবা কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া প্রভৃতি এলাকা থেকে ভুয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে আদালতে মামলা করছে। বিশেষ করে ১৯৬২-৬৩ সালের বালাম বই ও ১৯৬৫ ও ১৯৭০ সালের বন্যায় নষ্ট হওয়া নথির সুযোগ নিচ্ছে এসব টাউট ও দালালরা। এভাবে দীর্ঘ দুই-তিন দশক ধরে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে ভূমিদস্যুরা এখন পরিণত হয়েছে ধনাঢ্যে। আগে সরকারি অধিগ্রহণের জমিতে মামলা টুকে চাঁদা আদায় করলেও বর্তমানে তারা নতুন কৌশল নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সলিমুল্লাহ তালুকদার বলেন, “জমিতে খুঁটি গেড়ে দখল নেয়া কিংবা ভুয়া পাওয়ার বানিয়ে মামলা করা এখন লাভজনক ব্যবসা হয়ে গেছে। এতে প্রকৃত মালিকরা আতঙ্কে ভুগছে। ভূমিদস্যুদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদেরও সম্পৃক্ততা রয়েছে।” নাগরিক ঐক্য কলাপাড়া আহ্বায়ক কমরেড নাসির তালুকদার অভিযোগ করেন, ভূমিদস্যুরা বিভিন্ন সময় ভূমি অফিস থেকে বালাম বই ছিঁড়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে। তিনি প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেন। এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসমিন সাদেক বলেন, “ওয়ারিশ সনদ প্রদানের আগে ইউপি চেয়ারম্যানদের যথাযথভাবে খোঁজখবর নেওয়া উচিত। নামজারি প্রক্রিয়ায় তহসিলদার সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদন দিলে এবং রাখাইনদের ক্ষেত্রে আদালতের সনদ সংযুক্ত থাকলে ভূমিদস্যুতার ঝুঁকি কমে আসবে।”
