ePaper

নোয়াখালীতে কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর এলাকার মানুষ কিশোর গ্যাং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা এলাকার মানুষের উপর চালাচ্ছে হামলা, মারধর, নির্যতন। এলাকাবাসী কিশোর গ্যাং এর হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে। অনুসন্ধানে ও সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, নরোত্তমপুর ৯নং ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মো. শাকিল ও মো. ফারুকের পুত্র রাজুর নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং গঠন করে দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় মাদক সেবন, ইয়াবা ব্যবসা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ নানা সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলেও নেমে আসে নির্যাতন। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে এলাকার কেউ কথা বলার সাহস পায়না। গত ২৪ অক্টোবর সন্ধায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাকিলের কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের হামলায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত আশিফ, হাকিম ও বৃদ্ধ রেজাউল হককে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, ওই এলাকার আবদুর রাজ্জাকের পুত্র মো. হাকিম তার সিএনজি চালিয়ে মজুমদার হাট বাজার দিয়ে যাওয়ার পথে উল্লেখিত কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা অহেতুক সিএনজিতে চোর আছে বলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। এ সময় আশে পাশের লোকজন ও হাকিমের ভাই মো. সেলিম এগিয়ে এসে হাকিমকে নিয়ে যায়। এই নিয়া কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা সেলিমকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এ সময় চাপরাশি বড়ির মুরাদের জামানের পুত্র আবদুল হান্নান এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা তাকে গালমন্দ করে ও হুমকি দেয়। একই সময় তারা ধারালো অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে একই এলাকার মো. আশিকের উপর হামলা করে। এতে আসিকের বাম হাতের মধ্যম আঙ্গুলে ও অনামিকা আঙ্গুলে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। এর দুই দিন পর গত ২৬ অক্টোবর মজুমদার হাটের পূর্ব পাশে রেজাউল হকের বাড়িতে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে রেজাউল হককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এ সময় হামলাকারীরা দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সব ঘটনায় আবদুল হান্নান বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর ২৭ অক্টোবর রাতে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা এলাকায় প্রতিপক্ষের বাড়ি ঘরে হামলা চেষ্টা ও মহড়া দেওয়ার সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে একাধিক মোটর সাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। পরে থানার এস.আই পাপেল রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মোটরসাইকেলগুলো উদ্ধার করে। এ নিয়ে এলাকায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্থানীয়রা কিশোর গ্যাং এর হোতা শাকিল ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছে। তবে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত শাকিল ও ফারুককে এলাকায় পাওয়া যায়নি। মোবাইল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের পরিবারের সদস্যরাও কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। সহসায় বিষয়টি সমাধান করা হবে। তবে কেউ যদি কিশোর গ্যাং বা অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *