মো.শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী
নরসিংদীতে ৭ মাস ধরে বেতন পান না ২৮০ জন কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য কর্মী হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপিরা)। বেতন না পাওয়ায় চরম আর্থিক কষ্টে ভুগছেন গ্রামের দরিদ্র মানুষের সেবা প্রধান কারী প্রাথমিক চিকিৎসা স্বাস্থ্য কর্মীরা। শুধু বেতন নয়, কোথাও কোথাও নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আবার কোন কোন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত প্রদান করা ঔষধের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। যার ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী সরকারি এই প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না গ্রামের দরিদ্র মানুষ। ভুক্তভুগীরা জানান নরসিংদী স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা হয়েছে বর্তমান সিভিল সার্জন ডা.সৈয়দ আমিরুল হক যোগদান করার পর। তিনি নরসিংদীর স্থানীয় বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে নরসিংদী সদর হাসপাতালের আরএমও দায়িত্ব পালন করে প্রতিটা মিটিংএ এটেন করে ফ্যাসিস্ট সরকারের গুন গানে পঞ্চ মুখ ছিলেন তিনি। আর ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাব শালী লোক হিসেবে স্বাস্থ্য খাতে করেছেন ব্যাপক লুটপাট। তার আমলেই সদর হাসপাতাল থেকে বস্তাবর্তী করে ঔষধ চুরি করে নেওয়ার সময় আটক হন মালি। আর ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর ভাগিয়ে নেন সিভিল সার্জনের পদ। বেড়ে যায় আরো পাওয়ার এছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে সাধারন মানুষের সাথে করতে থাকেন দুর্ব্যবহার অভিযোগ ভুক্তভুগিদের। গত রোববার নিউজের তথ্যনিতে গিয়ে গনমাধ্যম কর্মীদের তথ্য না দিয়ে এমনই আচরন করেন সিভিল সার্জন ডা.সৈয়দ আমিরুল হক ও নরসিংদী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবু কাউছার সুমন। শুধু তাই নয় তিনি নিজ অফিসে না বসে সারাক্ষন সিভিল সার্জন অফিসে থাকেন যার ফলে গ্রহক সেবা পাচ্ছেন না ভুক্ত ভুগরা। স্বাস্থ্য কর্মীরা কেন ৮ মাস বেতন পাচ্ছেনা এবিষয়ে কোন উত্তর না দিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি সুরুপ কথাবলেন তারা। তার পর সিভিল সার্জন অফিস থেকে বেড়ীয়ে যেতে বলেন গনমাধ্যম কর্মীদের। সুত্র জানায় নরসিংদী সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২০৫ টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ক্লিনিকগুলিতে কর্মরত ২৮০ জন সিএইচসিপি। গেল বছরের জুলাই মাস থেকে বেতন পান না তারা। দীর্ঘদিন ধরে বেতন বন্ধ থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। কেউ কেউ ক্লিনিকে সেবা দেয়া বন্ধ করেছেন, কেউ তুলনামূলক কম সেবা দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নিয়মিত আসছেন না ক্লিনিকে। গ্রামের হত দরিদ্র জনগনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা চালু রাখতে অতিদ্রুত স্বাস্থ্য কর্মীদের বেতন চালু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ সি এইচ সিপিরা। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জানান, প্রায় ৮মাস ধরে বেতন পান না তারা। খুবই কষ্টে সংসার চলছে তাদের। তারপরও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন তারা। জেলায় মোট ২০৫ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপির মধ্যে অনেকেই বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই র্দুবিসহ অবস্থায় মধ্যে থেকেও গ্রামের হত দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আর বেতন না পেয়ে কি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তা কাউকে বলা যায় না বলেও জানা তারা। আগে ৩২ প্রকারের ্ঔষধ দিত, এখন দেয় মাত্র ২০ প্রকারের ঔষধ। আর জুলাই মাস থেকে বেতন হচ্ছে না তারা। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ৭০-৮০ টাকা ব্যয় করে ক্লিনিকে এসে রোগীদের সেবা দেন তারা। আর বেতন না পাওয়ার কারনে খুবই হতাশা হয়ে পরছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। বর্তমানে বেতন না পেয়ে তাদের মন মানসিকতাও ভাল নেই। তাদের মানসিকতা যদি ভাল থাকে তাহলে রোগীদের আরও বেশি সেবা দিতে পারবে বলে জানান তারা। কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের নির্দিষ্ট নিয়ম করে রোগীদের সেবা দেয়া হয় বলেও জানান, বিভিন্ন ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের পাশাপাশি রোগীদের সেবা দেই কিন্তু নিয়মিত বেতন পান না তারা, আর সহকর্মীরা যদি বেতন না পায়, তাহলে তাদেরও খারাপ লাগে বলে জানান স্বাস্থ্য কর্মীরা। এদিকে সরেজমিন ঘুরে নরসিংদী ৬টি উপজেলায় অফিস নির্ধারিত সময়ে ঘুরে কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ পাওয়া যায় বলে জানান গ্রাহকরা। এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী জানান কমিউনিটি ক্লিনিক আগে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলত। গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলিকে একটি ট্রাস্টের আওতায় নেয়া হয়েছে। এজন্য সিএইচসিপিদের নিয়োগপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ট্রাস্টের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, বর্তমান সরকার দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করবেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ আবারও আগের মত সেবা পাবেন বলেও জানান তিনি।