ePaper

নতুন ডিজিটাল ব্যাংক দেওয়ার উদ্যোগ, সিদ্ধান্ত ২৭ আগস্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক            

নতুন করে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২৭ আগস্ট পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

এর আগে গত ১৩ আগস্টের এক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হলেও ব্যাংকখাতের বর্তমান বাস্তবতায় কয়েকজন পরিচালক নতুন কোনো ব্যাংকের অনুমোদনের বিপক্ষে মত দেন।

০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনুমোদন পাওয়া নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি এবং কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। অভিযোগ রয়েছে, বিদেশে পাচার করা অর্থের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান দিয়ে এসব ব্যাংকের মালিকানা গঠন করা হয়। ফলে সরকার পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিত করে এবং কড়ি ডিজিটাল ব্যাংককে এখনো চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়া হয়নি।নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এর মালিকানায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত পাঁচটি বিদেশি কোম্পানি— ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস (সিঙ্গাপুর), ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনার্স, জেন ফিনটেক ও ট্রুপে টেকনোলজিস (যুক্তরাষ্ট্র)। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মালিকানা, আর্থিক অবস্থা ও কর পরবর্তী মুনাফা সম্পর্কে তথ্য জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর ১৮ আগস্ট বিদেশে চিঠি পাঠায়। তবে এখনো সন্তোষজনক তথ্য মেলেনি।অন্যদিকে, কড়ি ডিজিটাল ব্যাংকের মূল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান টেকনোহেভেন, যার সিইও হাবিবুল্লাহ নেয়ামুল করিম। তিনি সাবেক অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের স্বামী। কড়ির মালিকানাতেও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত চারটি কোম্পানি, যাদের পরিচয় বা আর্থিক অবস্থার সঠিক তথ্য না মেলায় এই ব্যাংক এখনো আরজেএসসি থেকে নিবন্ধনই নিতে পারেনি।

সূত্র জানায়, ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখনো বাংলাদেশে পুরোপুরি তৈরি হয়নি। একই সময়ে কয়েকটি প্রচলিত ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনেকেই নতুন লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।

তবে পরিকল্পনা থেমে নেই। আগ্রহীদের কাছ থেকে নতুন ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন চাওয়া হতে পারে শিগগির। ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আবেদন আহ্বান করে। তখন ৫২টি আবেদন জমা পড়ে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ৯টি প্রস্তাব পাঠানো হয় পরিচালনা পর্ষদের সভায়।

এর মধ্যে নগদ ও কড়ি ছাড়াও স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক এবং জাপান-বাংলা ডিজিটাল ব্যাংককে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওএল) দেওয়া হয়। অন্যদিকে বিকাশ, ডিজি টেন এবং ডিজিটাল ব্যাংককে পৃথক লাইসেন্স না দিয়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আবেদন বাতিল করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগেরবার রাজনৈতিক বিবেচনায় যে প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, এবার তার চেয়ে অনেক স্বচ্ছ ও কঠোর মানদণ্ডে নতুন আবেদনগুলো যাচাই করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *