শ্যামল রায় (গাইবান্ধা) গোবিন্দগঞ্জ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফরহাদ আলীর নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলায় কর্মরত চিকিৎসকরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গোবিন্দগঞ্জ কমিউনিটি হাসপাতালে (হাজী ক্লিনিক) এক প্রসূতি নারীর সিজারের বিষয়ে ডা. তৌহিদা ইয়াসমিন সোমা ও ডা. ফরহাদ আলীকে নিয়ে অপারেশন না করে টাকা নেওয়া ও অপচিকিৎসার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজ থেকে পোষ্ট করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বিষয়ে জানতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ডা. ফরহাদ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গত ৩ আগষ্ট (রোববার) বিকাল ৫টায় হাজী ক্লিনিক থেকে একজন প্রসূতির সিজারের বিষয়ে আমাকে কল করলে আমি সেখানে গিয়ে ডা. সোমাকে ফোন করি। তারপর সবাই উপস্থিত হলে আমরা ৫-৬ জনের একটি সিজারিয়ান টিম গঠন করে ওই নারীর সিজার করি। কারণ ২/৩ জন মিলে কখনো অপারেশন করা যায় না। অপারেশনের সময় আমার কাজ ছিল এ্যানেসথেসিয়া দেয়া। এ্যানেসথেসিয়া দিলে রোগী হার্টবিট সমস্যা হয়, প্রেসার কমে যায়, অক্সিজেন সেচুরেশন কমে যায়, রোগীর সাপ্লিকেশন কমে যায়। আমি মূলত এসব সামলাই। অপারেশনটি করেছেন ডা. সোমা এবং হাবীব এ্যাসিস্ট করেছিল। আমরা অপারেশন শেষ করে রোগীকে ফিট করে, রোগী স্ট্যাবল হলে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়েছি। অপারেশন শেষে ক্লিনিক থেকে বের হওয়ার সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় রোগীর লোকজন এই মূহুর্তে টাকা দিতে পারছে না, পরে আপনাকে টাকা পাঠিয়ে দিবো। এক সপ্তাহ পরে তারা আমাকে বিকাশে টাকা দেয়। তিনি আরও জানান, কয়েকদিন আগে আমি জানতে পারলাম রোগীর ইনফেকশন গ্রো করছে। সাধারণত ১০০ জন অপারেশনের রোগীর মধ্যে ২-৩ জনের ইনফেকশন গ্রো করে থাকে। ইনফেকশন গ্রো করার অনেক কারণ রয়েছে। যেমনঃ অপারেশনের আগে জিনিসপত্র ভালোভাবে জীবানুমুক্ত থাকতে হবে, অপারেশনের পরে হাসপাতাল থাকাকালীন রোগীকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে, বাড়িতে গেলে ভালোভাবে হাইজিনিক মেইনটেইন করতে হবে, প্রতিদিন সময়মত ঔষধ খেতে হবে। বাড়িতে গিয়ে রোগীর কাটা স্থানে ইনফেকশন হলে তার জন্য সরাসরি ডাক্তার দায়ী নয়। এটা রোগী বা তার পরিবারের অবহেলার কারনেও হতে পারে। এ বিষয়ে জানতে ডা. তৌহিদা ইয়াসমিন সোমার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে গোবিন্দগঞ্জ কমিউনিটি হাসপাতালের (হাজী ক্লিনিক) বিরুদ্ধে এর আগেও বেশ কয়েকবার ভূল অপারেশন, অপচিকিৎসা ও রোগীর মৃত্যুর মত ঘটনা ঘটেছে।
