মো. আব্দুল আজিজ, গাজীপুর
সদর উপজেলার মেম্বার বাড়ি দরগারচালায় পাঁচপীরের মাজারে সপ্তাহিক মেলার নামে প্রকাশ্যে চলছে যুবতী নারীদের খোলামেলা পোশাকে ডিজে গান, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সাউন্ড সিস্টেমের শব্দে কান ভারী হয়ে যায় মাজারে আগত ভক্তবৃন্দের। গানের আসরের পাশে বসে গাঁজাসহ মাদকদ্রব্য বেচাকেনা ও গ্রহণ করতে দেখা যায়। সরেজমিনে গত ২ অক্টোবর দিবাগত রাতে পাঁচপীরের মাজারে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার উত্তর এবং দক্ষিণ দুই পাশে মাজারের খালি জায়গায় ১২ টি গানের আসর বসেছে। তার মধ্যে দুটি বাদে বাকি সবগুলোতেই পাঁচ থেকে সাত জন যুবতী নারী আকর্ষণীয় পোশাকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সাউন্ড সিস্টেমে উত্তেজনাকর গান পরিবেশন করছেন। সাউন্ড সিস্টেমের আওয়াজে বুঝার উপায় নেই এটা মাজার নাকি কনসার্টের মঞ্চ, এতে পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে মাজারের। গানের আসরের উত্তর পাশেই বসে-দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে গাঁজা সহ মাদকদ্রব্য বেচাকেনা ও পান করতে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সী তরুণ ও যুবকদের। জানা যায়, প্রতি বৃহস্পতিবার প্রত্যেকটি গানের আসর থেকে তিন হাজার টাকা করে উত্তোলন করে মজার কমিটি, মেলা উপলক্ষে আগত ছোট বড় দোকানীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি গাড়িতে আদায় করছে মজার কমিটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি গানের মঞ্চের আয়োজক বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার একজন মেয়ে গান গেয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করেন। প্রতি আসরে পাঁচ থেকে সাত জন মেয়ে গড়ে ১৫ হাজার টাকা আয় করলে প্রতি আসরে এক লক্ষ টাকা মাজারে আগত দর্শনার্থীদের পকেট থেকে নেয়া হচ্ছে। এভাবে ১০টি আসর থেকে ১০ লক্ষ টাকা প্রতি বৃহস্পতিবার মাজারে আগত দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পকেট থেকে কাটা হচ্ছে। মাজার কমিটি পাচ্ছে ৩০ হাজার টাকা বাকি টাকা গানের আসরের আয়োজক ও মেয়েরা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের দরগারচালা এলাকায় অবস্থিত পাঁচ পীরের মাজারের পীরদের জীবন মৃত্যু সম্পর্কে কোন ইতিহাস না থাকলেও পাকিস্তান আমলে স্বপ্নে দেখানো একটি ঘটনা থেকে শুরু হয় মাজারের কার্যক্রম। মাজার কমিটির বর্তমান সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, পাকিস্তান আমলে কালু মোড়ল নামের এক ব্যক্তি গজারির লট কিনে তা কাটতে কাটতে মাজার সংলগ্ন এলাকায় আসলে তাকে স্বপ্নে দেখানো হয় উক্ত এলাকার গাছ না কাটার জন্য সেখান থেকেই স্থানীয়দের মাঝে উক্ত জায়গা বিশেষ গুরুত্বপেতে থাকে। মাজারের ভেতর যুবতী নারীদের খোলামেলা পোশাকে গান পরিবেশন ও মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমাদের নিষেধ আছে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে। এ বিষয়ে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই আমাকে তথ্য দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদ আহমেদ বলেন, মেলা গান ও মাদকের বিষয়ে আমার জানা নেই এই ধরনের মেলার অনুমোদন থানা প্রশাসন দেয় না, উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা চাইলে জয়দেবপুর থানা পুলিশ সহযোগিতা করবে।
