ePaper

কাজিপুরে চরাঞ্চলে স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ করলো শিক্ষার্থীরা

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি ভাঙ্গা সেতুর সংযোগ সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। যমুনার চরে অবস্থিত চরগিরিশ ইউনিয়নের চরনাটিপাড়ায় গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ একটি পাকা সেতুর পাশ দিয়ে ভেঙ্গে নালা বের হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এবার বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলে ওই সেতু দিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা সমাধানে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পূর্ববাংলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্থ সেতুর সাথে যোগাযোগ ঠিক রাখতে ধসে যাওয়া স্থানে সাঁকো নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েক বছর পূর্বে চরগিরিশ থেকে মনসুর নগর হয়ে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলা যাবার মূল রাস্তায় ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের দুই বছরের মাথায় বন্যার পানির তোড়ে সেতুটির পিলার মাটিতে দেবে যায়। এবং সেতুতে ওঠার একপাশ দিয়ে পানি গড়ায় সেখানকার মাটি ধসে যায়। এর ফলে মূল সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে ওই সেতু ব্যবহার করে প্রতিদিন চলাচলকারী স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী, হাটরে, স্থানীয় কৃষিপণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে পায়ে হেঁটে চলা সাধারণ মানুষদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সরকারিভাবে বরাদ্দ না আসলে কাজ সম্ভব নয় জেনে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই তাদের সংগৃহিত অর্থদ্বারা কাঠ, বাঁশ, ও অন্যান্য সামগ্রি কিনে সেতুটি নির্মাণ করেছে। পূর্ব কাজিপুর ছাত্র কল্যাণ পরিষদের শিক্ষার্থী এল ডব্লিউ রাসেল বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের বন্যার সময়ে চলাচলের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে সাঁকোটি নির্মাণ করি। এই কাজে স্থানীয় বিএনপির নেতা আয়নাল হক ও জামায়াত নেতা সাইদুর রহমান আমাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আমাদের শিক্ষার্থী বিপ্লব শেখ, নিরব তালুকদার, মুরাদ সামনে থেকে এই কাজ বাস্তবায়নে অংশ নেন। শিক্ষার্থী নিরব শেখ বলেন, আমরা বাঁশ, কাঠ, পেরেক, সিমেন্টের খুঁটি ব্যবহার করে সাঁকোটির নির্মাণ গতকাল শেষ করেছি। নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের দেখিয়ে দিলো কিভাবে ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে কাজ করতে হয়। অনেক মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে চলাচল করে। সবার পক্ষ থেকে আমি এই শিক্ষার্থীদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আয়নাল হক বলেন, ওরা (শিক্ষার্থীরা) আমাকে এই উদ্যোগের কথা বলার সাথে সাথে আমি ওদের কিছু সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহিত করেছি। নিঃসন্দেহে এটি প্রশংসনীয় কাজ। কাজিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিক্ষার্থীদের সাঁকো নির্মাণের বিষয়টি শুনেছি। সরকারিভাবে ওই কাজটি করার জন্যে বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *