ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ (বাসস): উপদেষ্টা এ.এফ. হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আজ বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এ.এফ. হাসান আরিফ, যার মৃত্যু দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থায় এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ.এফ. হাসান আরিফের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো
এ.এফ. হাসান আরিফ ১৯৪১ সালের ১০ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন। ১৯৭০ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং দীর্ঘ সময় ধরে দেশের সর্বোচ্চ আদালতগুলোতে আইন পেশা পরিচালনা করেছেন। তাঁর পেশাগত জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং আইনগত পরামর্শ প্রদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন
এ.এফ. হাসান আরিফ শুধু একজন উজ্জ্বল আইনজীবী ছিলেন না, তিনি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে দেশের আইনি কাঠামো আরো দৃঢ় ও গতিশীল হয়ে ওঠে। এছাড়া, ২০০৮ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর দক্ষতা এবং বিচক্ষণতার জন্য তিনি সবসময় প্রশংসিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতির শোকবার্তা এবং শোক প্রকাশ
আজ এক শোকবার্তায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ.এফ. হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, “এ.এফ. হাসান আরিফ ছিলেন একজন নির্ভীক আইনজীবী এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, যিনি বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর মৃত্যু দেশের আইন এবং বিচার ব্যবস্থার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
আইন ও বিচার ব্যবস্থায় অবদান
এ.এফ. হাসান আরিফের অবদান বাংলাদেশের আইন এবং বিচার ব্যবস্থায় চিরকাল স্মরণীয় থাকবে। তিনি আইনি পরামর্শ প্রদান, বিচারিক সিস্টেমের উন্নতি এবং আইনগত কার্যক্রমে তাঁর দক্ষতা দিয়ে দেশের আইনি ইতিহাসে এক আলাদা স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং পেশাগত নৈতিকতা দেশের আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে থাকবে।
উপসংহার
এ.এফ. হাসান আরিফের মৃত্যুতে আইনজীবী সম্প্রদায় এবং দেশের আইন অঙ্গন এক মহান ব্যক্তিত্বকে হারালো। তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণীয় থাকবে এবং তাঁর কর্মজীবন আইনি পেশায় নতুন প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। তাঁর মৃত্যুর শোক যেন দেশের আইনি জগতকে এক নতুন সপানে নিয়ে যেতে প্রেরণা দেয়, যা তাঁর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নীতিগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।
Share Now: