অতিপ্রবল ঘূণিঝড় মোখার তাণ্ডবের পর ফের পর্যটক পদচারণা বেড়েছে কক্সবাজার সৈকতে। সাগরের সান্নিধ্যপ্রেমীরা সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় বেলাভূমিকে মুখর করে রেখেছেন। স্থানীয় দর্শনার্থীদের পাশাপাশি বেড়েছে অবকাশ কাটাতে আসা নানান পেশাজীবী, বিপুল পর্যটক। বিকেলের সৈকত লোকারণ্য হয়েছে। আনন্দ, উচ্ছ্বাসে উত্তাল সাগরে ঢেউয়ের সান্নিধ্য নিচ্ছে অনেকে। সতর্ক থাকতে বারবার পরামর্শ দিচ্ছেন লাইফগার্ড কর্মীরা। নিরাপত্তা জোরদারের পুরো নজরদারি করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মো. শাহীন। প্রকৃতিতে জ্যৈষ্ঠের ক্ষিপ্রতা থাকার কথা, কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের পর দিনে রোদ আর রাতে বৃষ্টি হচ্ছে। পালটাচ্ছে সমুদ্রের রূপও। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে গত কয়েক দিন সাগরে নামতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছিল। এখন বৈরী আবহাওয়ার ভয় না থাকায় সৈকতে ফের বেড়েছে পর্যটক। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে সাগরতীরে পর্যটক দর্শনার্থীর পদচারণা ছিল লক্ষ করার মতো। লক্ষ্মীপুর সদর থেকে আসা পর্যটক দম্পতি মোহাম্মদ আলী ও ইয়াসমিন আকতার বলেন, ‘ঈদের পর কক্সবাজার আসার কথা ছিল। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে তখন আসা সম্ভব হয়নি, মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারসহ ঘুরতে চলে এলাম। এসে দেখি আমাদের মতো অনেক মানুষ এসেছেন। বেশ ভালো লাগছে।’ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে আসা পর্যটক কবির মাহমুদ বলেন, ‘কক্সবাজারে আমাদের এলাকার অনেক পরিচিত ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাদের কাছে জেনেছি, বৃষ্টি হলে সৈকতে নামলে অন্যরকম ভালোলাগা জন্ম হয়। বুধবার সকালে এসে দেখি, সত্যি বৃষ্টিতে বেলাভূমিতে বেড়ানোর মজাই আলাদা। কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের রাত যাপনের প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল রিসোর্ট ও গেস্টহাউজ রয়েছে। আগে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যটন মৌসুম হিসেবে ধরা হতো। এখন পুরো বছরই কমবেশি পর্যটক থাকে। আর বেলাভূমিতে পর্যটকের পাশাপাশি থাকে স্থানীয় দর্শনার্থীও। তাই প্রতিদিন বিকেলে সৈকতে লোকসমাগম বাড়ে। মোখা-পরবর্তী সময়ে এখনো একই অবস্থা বিরাজ করছে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মো. শাহীন বলেন, ‘এখন সারা বছর পর্যটকের উপস্থিতি থাকে, সেই চিন্তা মাথায় রেখেই আমরা নিরাপত্তা বলয় সব সময় একই রাখি।’ সৈকত ও পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা জোরদার করা রয়েছে, এর পরও কোথাও কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির শিকার হলে পুলিশবক্স, তথ্য কেন্দ্র বা ট্যুরিস্ট পুলিশ ভবনে এসে জানানোর অনুরোধ করেন ট্যুরিস্ট পুলিশের এ কর্মকর্তা।