লালমনিরহাটে চাঁদা না দেয়ায় মাইকিং করে তিস্তাহাটের টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাটের ইজারাদার অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আয়। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ দায়ের করার দীর্ঘদিন হলেও রহস্যজনক কারণে মামলা রেকর্ড করেনি থানা পুলিশ। তাই নিরুপায় হয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মেহেদী হাসান সোহাগ। তিনি তিস্তাহাটের ১৪৩০ বঙ্গাব্দ সনের ইজারাদার। অভিযোগে জানা গেছে, মাত্র ১ বছরের জন্য ১৪৩০ বঙ্গাব্দ সনের ইজারাদার প্রাপ্ত হয়ে তিস্তাহাটে টোল আদায়ের দায়িত্ব পান মেহেদী হাসান সোহাগ। ১লা বৈশাখ থেকে তিস্তাহাটের টোল আদায়ের দায়িত্ব পাওয়ায় গোকুন্ডা ইউনিয়নে পাঙ্গাটারী গ্রামের মিয়াদ হোসেন (২২), রাহিদ (২৩), কাব্য মিয়া (২০), ফাতের আলী ওরফে (নতুন বাবু) (৩২), খোকন (৩৫), মাইদুল (২২), ফরহাদ (২৫), আমিনুর (২০) ও একরামুল (৫২) গংরা তিস্তাহাট ইজারাদারের নিকট ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবীকৃত চাঁদা না পাওয়ায় ২৫ এপ্রিল, সকালে ইজারাদার মেহেদী হাসান সোহাগ তিস্তাহাটে টোল আদায়ের অফিস সংলগ্ন জনৈক আলমের পানের দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র আবারও অভিযুক্তরা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ইজারাদার মেহেদী হাসান সোহাগ চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে শুরু হয় মারধর। এতে রক্তাক্ত ইজারাদারের ব্যবসায়ীর সাথে থাকা ব্যবসার এক লাখ ১৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে আহতাবস্থায় হাট ইজারাদার মেহেদী হাসান সোহাগকে পথচারীরা উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাপাতালে ভর্তি করেন। যাহার রেজিষ্ট্রেশন নং-২২৮/ ১৪৬, বেড নং-৩২। পরে মেহেদী হাসান সোহাগ লালমনিরহাট সদর থানায় উল্লেখিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় দীঘদিনেও থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুনরায় প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রাখেন। এমনকি ক্ষমতার জোড়ে মাইকিং করে তিস্তাহাটের টোল আদায় বন্ধ করে দেন। পরর্বতীতে ২৭ এপ্রিল, হাটের টোল আদায় বন্ধের বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভুগী। কিন্তু তিনিও কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় (৩০ এপ্রিল) আবারো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন ওই ইজারাদার। অবশেষে নিরুপায় হয়ে হাট ইজারাদার মেহেদী হাসান সোহাগ প্রতিকার চেয়ে (১৪ মে) জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে ইজারাদার মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, এবার হাটের ইজারাদার হতে না পেরে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা না পেয়ে আমাকে মারপিট করেন। এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে মাইকিং করে টোল আদায় বন্ধ করে দেন। আমি কোন উপায় না পেয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ অভিযোগ করেছি। সন্ত্রাসীদের কারণে আমি দিনদিন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আমি এর বিচার কার কাছে চাই। এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, তিস্তা হাটের টোল আদায়ের ঘটনা তদন্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও তদন্ত করা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।