ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছেন কৃষকেরা। এখানকার কৃষকেরা উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। সবজি ঠাকুরগাঁও জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী করা হচ্ছে। এতে করে ঐ ৫টি গ্রাম ইতিমধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলাজুরে সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়ার বাগের হাট, চন্ডীপুর, নীলার হাট, গুঞ্জরগড় ও চকহলদি গ্রামে প্রতি বছর আশাতীত সবজি উৎপাদন হচ্ছে। গড়ে প্রতি বছর দেড় হাজার টন সবজি উৎপাদন করছেন এ কয়েক গ্রামের কৃষকেরা। উৎপাদিত সবজি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাট-বাজারে রপ্তানী হয়। ১৬ মে মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন সবজি যেমন, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, বেগুন, ঢ্যাঁড়স, কাঁকরোল, করলা, পটোলসহ নানা জাতের সবজি বাণিজ্যিকভাবে আবাদ করছেন কৃষকেরা। গ্রামগুলো ঘুরে লক্ষ্য করা যায় ক্ষেত থেকেই পাইকারেরা সবজি কিনছেন। বাগের হাট গ্রামের কৃষক মো: সোহাগ হোসেন জানান, কয়েক বছর আগেও ২-৩ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতেন। তবে এখন রবি মৌসুমে পুরো জমিতেই সবজি আবাদ করছেন। একই গ্রামের কৃষক খাদেমুল বলেন, ‘ধান চাষের চেয়ে সবজি লাভজনক। এক বছরে মৌসুমভিত্তিক নানা সবজি চাষ করছি। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ করতে পারছি। পাশ্ববর্তী চন্ডীপুর গ্রামের কৃষক রুবেল ইসলাম বলেন, এক সময় শুধু বোরো, আমন ধান চাষা করতাম। কয়েক বছর ধরে অন্য ফসলের চাষাবাদ কমিয়ে সবজি চাষে ঝুকেছি। এবার সবজির ফলন ভালো হয়েছে। তবে শুরুতে কিছুটা বাড়তি দাম পেলেও এখন বাজার দর কিছুটা কমে গেছে। বাগেরহাট আড়তের স্থানীয় ব্যবসায়ি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এই ইউনিয়নের এই ৫ গ্রামের উৎপাদিত সবজি পাশ্ববর্তী গড়েয়া বাজারের আড়তে পাইকারিভাবে বেচাকেনা হয়। বিকেলের পর থেকে ট্রাকে সবজি লোড করা হচ্ছে। রাতে এসব সবজি ট্রাকে করেই সরাসরি রাজধানী ঢাকার আড়তে পৌঁছে যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট ৩ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের উল্লেখিত ৫টি গ্রাম কৃষিতে সমৃদ্ধ। এখানকান কৃষকেরা বিগত কয়েক বছর থেকে সবজির ন্যার্য্য মূল্য পাচ্ছেন। এ কারণে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তারা। এখানকার কৃষকদের দেখে অন্য কৃষকরাও সমন্বিত কৃষিতে আগ্রহী হবেন এমনটি প্রত্যাশা করছি।