ভাগ্নের সাথে অবৈধ সম্পর্কের জেরে জন্ম হওয়া নবজাতককে প্রথমে হত্যা চেষ্টা পরে এক হোটেল ব্যবসীকের কাছে ৪০ হাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে। গত ২৩ এপ্রিল ঈদের পরদিন ভোরে নবজাতকের জন্ম হলে প্রথমে খোলা টয়লেটে ফেলে দেয় মা। প্রতিবেশি এ দৃশ্য দেখে ফেলায় ঘটনার জানাজানি হলে তাৎক্ষনিক মেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়। পরে ওই দিনই গৃহবধুকে তালাক দেয় তার স্বামী। তালাকের পর বাবার বাড়ি যাওয়ার সময় ভায়ের ও মায়ের সহযোগীতায় গাংনীর এক হোটেল ব্যবসীকের কাছে ৪০ হাজারে বিক্রি করে দেয়। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে।
ওই গৃহবধুর স্বামী দিনমজুর আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশি ভাগ্নে সম্পর্কের বশির আলীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে আমার স্ত্রী সুখি খাতুনের। আমরা বুঝে ওঠার আগেই আজ থেকে প্রায় ৯ মাস বিয়ে করার উদ্দেশ্যে তারা দুজনেই ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এর ২০ দিন পর বশির আলী তাকে বিয়ে না করে পালিয়ে আসে। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে পুনরায় স্ত্রীকে আমি ফেরত নিই। তারপর থেকে সুখি খাতুনের শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয়(অন্তসত্তা)। তাকে জিঞ্জেস করলে সে উত্তর দেয়, আমি মোটা হওয়ার জন্য ওষুধ সেবন করছি। পরে ২৩ এপ্রিল ইদের পরদিন ভোরে সে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সেই সন্তানকে সে মেরে ফেলার জন্য কাচা টয়লেটে ফেলে দেয়। ইট প্রতিবেশি ও আমার বড় মেয়ে দেখে ফেলার পর বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনা জানাজানি হলে মানসম্মানের কথা বিবেচনা করে ওই দিনই বিকালে তার পরিবারের লোকজনকে ডেকে তালাক দিয়ে দিই। পরে তার মা ও ভায়ের সাথে নিজ বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামে চলে যায়। এ বাচ্চা আমার না , কারন আমি গত ২০১৮ সালের দিকে অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষত্ব নষ্ট করে ফেলি। আরিফুল ইসলামের সাথে সুর মিলিয়ে গ্রামের প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
একই গ্রামের ভ্যান চালক নাসিম আলীর ভ্যান যোগে প্রথমে গাংনী গিয়ে বাচ্চাকে বিক্রি করে ৪০ হাজারে। ঘটনার সাক্ষী ভ্যান চালক বলেন, গাংনীর টাউন ফুটবল মাঠের কাছে একটি লাইব্রেরীর সামনে থেকে বাচ্চাকে নিয়ে যায় গাংনীর ডন নামের একজন। তবে ডন নামের কাওকে খুজে না পাওয়া গেলেও হোটেল ব্যবসীক ইমন আলীর নাম শোনা যায় বিভিন্ন মাধ্যমে। বাচ্চা বিক্রির আরেক সাক্ষি শ্যামপুর গ্রামে বুলু খাতুন বলেন, সুখি খাতুনের ভাই ও মায়ের পরামর্শে গাংনীতে বাচ্চাকে বিক্রি করে, আমি তখন সাথে ছিলাম। কিন্তু যে কিনেছে তার নাম ঠিকানা আমি জানি না।
এ ব্যাপারে হোটেল ব্যবসীক ইমন আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাচ্চার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইমন আলীর আত্মিয় বাচ্চা কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত মা ও তার পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিকবার যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।