চৈত্রের কাঠফাঁটা রোদে তপ্ত চারপাশ। সবখানে গরম বাতাস। ভ্যাপসা গরমে ঘরে বাইরে কোথাও নেই স্বস্তি। এর মধ্যে রাজধানীর চিরচেনা যানজট উত্তাপ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন অবস্থায় মানুষ বৃষ্টির জন্য আকাশপানে তাকিয়ে থাকলেও আপাতত সুখবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস। ফলে কবে বৃষ্টি নামবে সেই সুখবর পেতে মানুষকে আরও অপেক্ষায় থাকতে হবে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তীব্র গরমে অতিষ্ট অবস্থা রাজধানীতেও। আজও একই অবস্থা থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। ফলে গরমের মধ্যেই আরও কিছুদিন কাটাতে হবে নগরবাসীকে।
সোমবার সকাল থেকেই তীব্র গরম ভোগাচ্ছে নগরবাসীকে। শ্রমজীবী আর গণপরিবহনের যাত্রীদের অবস্থাও সঙ্গীন। ঘামে ভেজা মানুষ খানিকটা স্বস্তির খোঁজ করলেও মিলছে না সেই স্বস্তি। নগরীতে লোকাল বাসে চলাচলকারী যাত্রীদেরও ভোগান্তির যেন শেষ নেই। যাত্রী নিয়ে ছুটে চলা প্রতিটি গাড়ির ভেতরে উনুনের মত উত্তাপ। ঘেমে একাকার যাত্রীরা। টপটপ করে পানি ঝরছে তাদের শরীর বেয়ে।
অফিসগামী মানুষ গরম উপেক্ষা করে সকালে অফিসে পৌঁছালেও ভালো নেই দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। রিকশা চালক, পরিবহন শ্রমিকরা নাকাল হচ্ছেন তীব্র গরমে। পথের পাশে একটু ছায়া পেলেই সেখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন মানুষ। সেখানে কিছুটা বাতাসের দেখা মিললেও সেটিও গরম হাওয়া।
উত্তাপের কারণে ঘরের ভেতরেও থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। ফ্যান থাকলেও গরম বাতাসে গা ভিজে যাচ্ছে। দিনের বেলায় বাইরে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গরমের কারণে বেশি সময় যাত্রী পরিবহন করতে পারছেন না রিকশাচালকরা। দীর্ঘ সময় বিশ্রাম নিয়ে যাত্রী পরিবহন করতে চাইলেও ভাড়া হাঁকছেন বেশি। রিকশা চালকদের ভাষ্য, গরমের কারণে তাদের মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে। রোজার সময় এমন গরমে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। এমন অবস্থার মধ্যে মানুষ আকাশপানে তাকিয়ে থাকলেও বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে।
সোমবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগসহ মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, চলমান এই তাপপ্রবাহ ১৫-১৬ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর হয়তো বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকতে পারে। তবে যেকোনো সময় আবহাওয়া পরিবর্তনও হতে পারে। হঠাৎ করেও আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ আছে। আমাদের আবহাওয়া অফিস ২৪ ঘণ্টা খোলা আছে। কোনো পরিবর্তন হলে আমরা জানাব।
আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গাতে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ডিমলায় সর্বনিম্ন ১৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আজ ঢাকায় দক্ষিণ পশ্চিম অথবা পশ্চিম দিক থেকে ঘন্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭২ শতাংশ। ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৪২ মিনিটে।