ঘানি তেলের মালিকরা জানান, সরিষার আবাদ কমে যাওয়ায় অনেক তেলের ঘানি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের কৃষি প্রণোদা থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনও হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্বাবধানে এবার জেলায় ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ ও বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাই ভাই তেল কলের মালিক সোহরাব হোসেন জানান, সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় এবার বাজারে সরিষার ব্যাপক আমদানী। তাই তিনি এবার পর্যাপ্ত সরিষা কিনেছেন ঘানিতে তেল করার জন্য। ঘানি বিক্রি করার চিন্তা থেকে ফিরে এসেছেন বলেও জানান তিনি। রতন তেলে কলের মালিক আসাদুজ্জামান রাজু বলেন, বিএসটিআইয়ের অনুমোদন প্রাপ্ত তার তেল। তিনি খোলা ও প্যাকেটজাত তেল পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন। তিনি বাংলাদেশ সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে প্রশিক্ষণ ও সনদ প্রাপ্ত একজন তেল ব্যবসায়ী। জেলায় ৮৫টি তেলের ঘানি রয়েছে। তারমধ্যে রতন তেল কল সবচেয়ে বড়। এখানে ফিল্টার মেশিন দিয়ে ময়লা আবর্জনা ছেকে উন্নত পরিবেশে তেল তৈরি করা হয়। তেল ভালো রাখার নির্দেশাবলী একটি লিফলেট তেলের সঙ্গে প্রদান করা হয়ে থাকে বলেও জানান তিনি। বর্তমানে বাজারে সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা মণ। সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে পাইকারী ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এবার সরিষার ভালো দাম পেয়ে কৃষকরাও খুশি বলে জানান ধলাহার গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়পুরহাট জেলা মূলত বরেন্দ্র অঞ্চলের আওতাভুক্ত হওয়ার কারণে সরিষা চাষে মাটির গুণাগুন ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অধিক হারে এবার সরিষার চাষ হয়েছে জয়পুরহাট জেলায়। ২০২২-২০২৩ ফসল উৎপাদন মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার আওতায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। এতে সরিষার উৎপাদন হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। জেলার তেলের ঘানি গুলোতে এখন রাত দিন সমান করে চলছে সরিষা ভাঙ্গার কাজ। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, সরকারের বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে প্রণোদনা কর্মসূচরি ফলে জেলায় দিনি দিন সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষা চাষে সফলতার জন্য কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নতমানের বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারও সরিষার বাম্পার হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
—