গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শিক্ষকদের দায়িত্ব অবহেলা ও উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসারদের সঠিক তৎপরোতা না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। অধিকাংশ সহকারী শিক্ষা অফিসাররা বিদ্যালয়ে না গিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে বসে থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করতে প্রধান শিক্ষকদের মোবাইল ফোনে ডেকে আনা হয় শিক্ষা অফিসে। অধিকাংশ সময়ই প্রধান শিক্ষকরা কাগজপত্র ঠিক করতে শিক্ষা অফিসে আসার কারণে সহকারী শিক্ষকরা ঠিক মতো পাঠদান না করে দায়সারাভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে থাকে। ফলে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যান্ত নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। সে কারণে অভিভাবক মহল কোচিং সেন্টারকেই সন্তানদের শিক্ষার জন্য বেশি প্রাধন্য দিচ্ছে। যার কারণে বেশকিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দিন দিন শিক্ষার্থী শূন্যের কোঠায় যাচ্ছে। ইতিপূর্বে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম, দুর্নীতির খবর জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় প্রকাশ হলে শিক্ষা অফিস তার সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে দায়সারাগোচরে ওইসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের শো’কোচ করেন। উক্ত শো’কোচের যেমন তেমন জবাব দিলেই তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়না। আবার যে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে সেই সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর কোন অভাব নেই এবং এবং সেই সকল বিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক। গত ২৯ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার দিগদারী ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ছাড়া ৪ জন সহকারী শিক্ষককে পাওয়া গেলেও শিক্ষার্থী শূন্য দেখা যায়। ৩০ মার্চ ১১টার দিকে আমলাগাছী ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক সহ ৬ জন শিক্ষককে পাওয়া যায়, তবে শিশু শ্রেণিতে ৭ জন, ১ম শ্রেণিতে ৪ জন, ২য় শ্রেণিতে ৫ জন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়। ওইদিন দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে চককুমেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩ জন সহকারী শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া যায়, তবে ৩য় শ্রেণিতে ১০ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে ১ জন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়। ২ এপ্রিল ১২টা ৪৩ মিনিটে বেতকাপা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ৬ জন শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া যায়, তবে ৩য় শ্রেণিতে ১ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে শূন্য ও ৫ম শ্রেণিতে ৫ জন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়। ওইদিন দুপুর ২টায় বোর্ডের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ছাড়া ৪ জন সহকারী শিক্ষক উপস্থিত পাওয়া যায়, তবে কোন ক্লাশেই কোন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। ৩ এপ্রিল দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে কিশামত চেরেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ৫ জন শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া যায় তবে ৩য় শ্রেণিতে ৮ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ৮ জন ও ৫ম শ্রেণিতে ৭ জন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়। ওইদিন দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিটে সাইনদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ৬ জন শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া যায় তবে ৩য় শ্রেণিতে ৬ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ২ জন ও ৫ম শ্রেণিতে ২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া যায়। তাই প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উ”চপর্যায়ের তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতম মহল।