দেশের ১২ জেলা ও ২০ উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নামক বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বেলা তিনটায় মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপস্থিত থেকে ভার্চুয়ালি এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার শুভ উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান এমপি। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ ফরিদ হোসেন মিঞা, ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল ফজল মোঃ সাহবুদ্দিন খান, সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাজহারুল ইসলাম, সাভার উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন খান, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আক্তার সুমি, সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা প্রমুখসহ অন্যরা। উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে সারা দেশের ৩৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১২টি জেলা সদর হাসপাতালে পাইলটিংভাবে এ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এই তালিকায় কেরানীগঞ্জ ও সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়া রাজধানীর কোনো হাসপাতাল নেই। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বৈকালিক চিকিৎসাসেবায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র কনসালটেন্টরাও রোগী দেখবেন। এজন্য ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ‘সরকারি হাসপাতালে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস’ শুরুর জন্য গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ৫১টি হাসপাতালের একটি তালিকার প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নীতিমালায় অধ্যাপক পর্যায়ে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা; তার সঙ্গে সহযোগী দুজন পাবেন ৫০ টাকা করে। সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কনসালট্যান্ট পাবেন ৩০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালট্যান্ট বা সমপর্যায়ের চিকিৎসকেরা পাবেন ২০০ টাকা করে; যাদের সহযোগী দুজন পাবেন ৫০ টাকা করে। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় ছোট অস্ত্রোপচারের জন্য ৮০০ টাকা, সিজারের ক্ষেত্র ১ হাজার ৫০০ টাকা ফি ধরা হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালে রোগীদের সার্জারি, ডায়াগনস্টিক/ক্লিনিক্যাল/ প্যারা-ক্লিনিক্যাল টেস্টসহ বিভিন্ন রকম পরীক্ষার জন্যও বৈকালিক ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। একজন চিকিৎসককে সপ্তাহে দুই দিন তিন ঘণ্টা করে সেবা দিতে হবে। প্রসঙ্গত আরও উল্লেখ্য, জেলা পর্যায়ে এই ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস চালু হতে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফেনী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, জামালপুর, ঝিনাইদহ, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, ভোলা ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল। একই প্রক্রিয়ায় যেসব উপজেলায় শুরু হতে যাচ্ছে এই ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস, সেগুলো হলো- ঢাকার সাভার, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, টাঙ্গাইলের মধুপুর, কিশোরগঞ্জর ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স; চট্টগ্রামের পটিয়া, নোয়াখালীর সেনবাগ, কুমিল্লার দাউদকান্দি, কক্সবাজারের পেকুয়া; জামালপুরের সরিষাবাড়ী, শেরপুরের নকলা; যশোর জেলার মনিরামপুর, মাগুরার শ্রীপুর; রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম ও রাজশাহীর পবা; রংপুর জেলার বদরগঞ্জ, নীলফামারীর ডোমার; বরিশাল বিভাগের বরগুনার আমতলী ও বরিশালের আগৈলঝাড়া এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও সিলেটের গোপালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।