যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। সকালে অফিস আওয়ারে ও বিকেল ৩ টার পর থেকে যানজটের ভয়াবহতা বাড়েছে। ইফতারের আগ মুহূর্তেও রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তীব্র যানজট দেখা যায়। সকাল থেকে যানজটে যানবাহন গুলো ধীরগতি হবার কারনে দিনভর যানজটে কাটছে রাজধানীর বাসিন্দাদের।
বিজয় সরণি এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ী গুলো। নয়ন আহমেদ বাসের জানালা দিয়ে মাথা বাহিরে দিয়ে দেখছেন যানজটের দুর্ভোগ, তিনি জানালেন ‘এখন সকাল ৭ টার সময় থেকেই যানজট শুরু হচ্ছে। ছোটো ছোট রাস্তা গুলো থেকে গাড়ি গুলো প্রধান রাস্তায় ঢুকছে, এর অধিকাংশ হলো স্কুলমুখী।
রমজানে মাধ্যমিক ও কলেজ বন্ধ হলেও প্রাথমিক ও কেজি স্কুল খোলা। এই কারণে এমন ভয়াবহ যানজট।
জানা যায়, এবার রমজানে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ ছুটি থাকবে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস চলবে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত।
সরজমিন পরিদর্শনে রাজধানীর পুরানা পল্টন লিটল জুয়েলস নার্সারি স্কুলে দেখা যায়, এখানে সবাই বিত্তবান পরিবারের সন্তান, প্রায় সবাই বেক্তিগত কারে এসেছে। বেক্তিগত গাড়ির চাপে সারাদিন ফাঁকা সড়কটিও ১ ঘন্টার বেশি সময় ধরে থমকে রয়েছে।
অভিভাবকরা রমজানে স্কুল খোলা রাখাকে তাদের জন্য কষ্টকর বলছেন।
বড় মগবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকগন রমজানে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখাকে অমানবিক বলছেন।
রেসমা আক্তার, কহিনুর, শাহানাজ ও রেবেকা আক্তার তিব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রমজানে ৯ দিন স্কুল খোলা রেখে শিক্ষা ব্যবস্হার কি ধরনের পরিবর্তন বা উন্নতি করবে প্রাথমিক কতৃপক্ষ?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া এসব কর্মকর্তার রোষানল থেকে বাঁচার উপায় নেই। আমরা মনে করি এটা হয়েছে কর্মকর্তাদের হিংস্রতা থেকে, শিক্ষকরা ছুটি কাটাবে আর তারা অফিস করবে এমন মনোভাব থেকে এ সীদ্ধান্ত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এসব সমালোচিত সিদ্ধান্ত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
তারা আরও বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবস্থা খারাপ। তিব্র যানজটে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমাদের সন্তানের কিছু হলে আমরা প্রাথমিক কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করবো বলে জানালেন তারা।
রাজধানীর পুরানা পল্টন, কাকরাইল, শাহাবাগ, বাংলামটর, মগবাজার সড়ক ঘুরে দেখা যায় এসব সড়কে ভয়াবহ যানজট। গণপরিবহণ সংকট অন্য দিকে তীব্র যানজটে অতিষ্ট নগরবসী।
কাকরাইলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন নাইম। সকাল ৭টায় বাসা থেকে বের হয়ে মোহাম্মদপুরে বাসে উঠেছেন। তবে শাহাবাগ পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের মত। তিনি জানালেন, ‘প্রাইভেট গাড়ির চাপে রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। ৪০ মিনিট হলো একই স্হানে আছি। এসব প্রাইভেট গাড়ির প্রায় সবগুলো স্কুলগামী।’
সদরঘাট থেকে উত্তরাগামী বাস ভিক্টর পরিবহনের চালক শামসুল বলেন, সকাল থেকে ভয়াবহ জ্যাম। সকালে সদরঘাট থেকে উত্তরা যেতে সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা। এভাবে যানজট বাড়তে থাকলে রোজায় গাড়ি চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। এছাড়া রমজানে অফিসের সময় পরিবর্তনের কারণে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। ফলে রাজধানীজুড়ে এমন যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন