ঢাকা, শুক্রবার, ৩১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

দুবাইয়ে উদ্বোধনী মঞ্চে না উঠেই চলে গেলেন সাকিব

‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। গতকাল ছিল ওই প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তবে এদিন উদ্বোধনী মঞ্চে না উঠেই ১০ মিনিটের মধ্যে চলে যান তিনি।

বুধবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি রেঞ্জ রোভার গাড়িতে দুবাইয়ের দেরা বাজারে আসেন বিশ্বসেরা এই আলরাউন্ডার। এ সময় তার সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন আরাভ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী আরাভ খান।

বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনী আয়োজন শুরু হয়। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে যোগদেন উপস্থাপক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী বেলাল খানসহ আরও অনেকে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আরাভ খান ঘোষণা দেন প্রধান ক্রেতাদের সাকিব আল হাসানের সই করা জার্সি ও ব্যাট উপহার দেওয়ার কথা।

এদিকে একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশের পর বেরিয়ে আসে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারীর আসল পরিচয়। এরপর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। জানা যায়, আরাভ খান পরিদর্শক পদমর্যাদার এক পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার পলাতক আসামি। বর্তমানে দুবাইয়ে স্বর্ণের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। সাকিব আল হাসান তার ডাকেই দুবাইয়ে গিয়েছেন আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) স্কুল অব ইন্টেলিজেন্স পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে (৩৪) পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। একই বছরের ১০ জুলাই নিহত পুলিশ সদস্যের ভাই ডিএমপির বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয় আরাভ খানকে। এরপর ২০১৯ সালে আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রেও ছিল আরাভ খানের নাম। মামলার এজাহার অনুযায়ী আরাভের আসল নাম রবিউল ইসলাম আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয়।

মামুন হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে রবিউল ছাড়াও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া (২১), নিহত মামুনের বন্ধু রহমত উল্লাহ (৩৫), স্বপন সরকার (৩৯), দিদার পাঠান (২১), মিজান শেখ (২১), আতিক হাসান (২১), সারোয়ার হোসেন (২৩) এবং দুই কিশোরীকে আসামি করা হয়।

পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা নিশ্চিত হয়েছি দুবাইয়ের আরাভ খানই হত্যা মামলার আসামি রবিউল। তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়েই দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। ওই পাসপোর্টে তার নাম আরাভ খান রাখা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, হত্যা মামলার সাজা থেকে বাঁচতে আবু ইউসুফ লিমন নামে এক তরুণকে বিকেএসপিতে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখান আরাভ। পরে ওই তরুণ আরাভের পরিবর্তে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এই সুযোগে সরকারের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সহায়তায় নকল পাসপোর্ট বানিয়ে দেশত্যাগ করেন তিনি। আশ্রয় নেন ‍দুবাইয়ে। পরে এ বিষয়টি জানাজানি হলে লিমনকে আদালত খালাস দেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে খুনি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে গ্রেফতারের জন্য অনুরোধ করবো। তাকে দেশে ফেরত আনা হবে। এছাড়া তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করলেন সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Tweet about this on Twitter
Twitter
Email this to someone
email
Print this page
Print
Pin on Pinterest
Pinterest

দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন