লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাছ ও মাদক ব্যবসার টাকা নিয়ে দ্বন্ধে ডেকে নিয়ে মো. নিশানকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে তিন বন্ধুর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-নুর মোহাম্মদ, নোমান ও আবদুল্লাহ। তারা রায়পুর উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে রায়ের সময় আসামি নুর মোহাম্মদ ছৈয়াল ও নোমান হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি আব্দুল্লাহ প্রকাশ জাইল্লা আব্দুল্লাহ পলাতক রয়েছে। আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ভিকটিম নিশান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার আবদুল বারেকে পালকপুত্র। তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রায়পুরের চরকাছিয়া গ্রামে বসবাস করতেন। তিন ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। আসামিদের সঙ্গে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে আসামিরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ওই রাতে তিনি আর ঘরে ফেরেননি। দুইদিন পর (৮ জানুয়ারি) আসামি নোমান ভিকটিমের স্ত্রীর মোবাইলফোনে কল দিয়ে জানান ‘তাকে (নোমান) যেন বিপদে না জড়ানো হয়’। পরে একইদিন বিকেলে বিউটিকে প্রতিবেশি বিল্লাল হোসেন বলে চরকাছিয়া গ্রামে ভিকটিমের গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহ পড়ে আছে। ঘটনাস্থল গিয়ে স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন তিনি। পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একইদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে রায়পুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩ আসামিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিরা ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতেই গলায় ফাঁস দিয়ে রাখে। ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তিন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে রায় প্রদান করেন। লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।