টানা প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির সামনে আন্দোলনের কোনো বিকল্প দেখছেন না দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এবারের আন্দোলনে ব্যর্থ হলে কোনো অস্তিত্ব থাকবে না বলেও নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন তিনি। এজন্য সবাইকে সর্বাত্মক আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেলে গুলশানে চট্টগ্রাম বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দলীয় সমর্থক সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা শুনলে মনে হয়, তাদের চেয়ে গণতন্ত্রকামী আর কেউ নেই! তাদের এমন একটা ছদ্মবেশীভাব এমন উন্নয়ন আর কেউ করছে না। মনে হচ্ছে সবচাইতে কল্যাণকামী সে। এদিকে তারা বিদ্যুৎ দিয়ে পকেট কেটে শেষ করছে। অন্যদিকে জনগণকে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে তুলে দিচ্ছে। বিরোধী দলকে মামলা দিয়ে দমন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। শেষে আবার উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, না, আমি তো গণতন্ত্র চালাচ্ছি।’
সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনোই নির্বাচন কমিশনে হস্তক্ষেপ করে না। নির্বাচন কমিশনার ফ্রি নির্বাচন করছে। এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘এর চেয়ে আর হাসির কথা কী হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে এখন ঘোড়াও হাসে। সরকারপ্রধান এও বলেছেন, নির্বাচন কমিশনার ফ্রি, এখানে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। কোনো অত্যাচার করা হয় না। কোনো নির্যাতন করা হয় না। উনার এ কথায় ঘোড়াও হাসে!’
ফখরুল বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে, আগামী নির্বাচনও ১৪-১৮ সালের মতো করবে। আর আমরা যে তিমিরে ছিলাম সে তিমিরে যাব। আরও ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে। তারা সামনে লুট করবে, চুরি করবে, ডাকাতি করবে, কেউ কিছু বলতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো চাপের কাছে মাথা নত করি না- গতকাল প্রধানমন্ত্রী এমন করে দাম্ভিকের মতো কথা বলেছেন। কত দাম্ভিক কথা চিন্তা করেন।’
জনগণের চাপ শুরু হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আমি অন্য কারো কথা বলতে চাই না। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) জনগণের কাছে নতিস্বীকার করতে হবে। এদেশের মানুষ এবার জেগে উঠেছে। আন্দোলন শুরু হয়েছে, এ আন্দোলন দিন দিন বেগবান হচ্ছে। প্রতিদিন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।’
দেয়ালে পিঠে গেছে আমাদের- এমন মন্তব্য করে মহাসচিব বলেন, ‘এইবার আমরা যদি ব্যর্থ হই, আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সুতরাং আমাদের কোনো বিকল্প নেই। আন্দোলন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন, আন্দোলন। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারকে পরাজিত করতে হবে। আমরা কোনো ভায়োলেন্স করতে চাই না। কিন্তু আমাদের উপরে যে কেউ আক্রমণ করে সে আক্রমকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে।’
এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।