চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে অক্সিজেন বোতলজাত করার সময় অতিরিক্ত চাপেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। ঘটনায় তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে এ প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ৯টি সুপারিশও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রাকিব হাসান তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, তদন্তে অনেক বিষয় উঠে এসেছে। এ দুর্ঘটনার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের অনেক গাফিলতি ছিল। যার কারণে এ বিস্ফোরণ ঘটছে। কী কী গাফিলতি ছিল তা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল কারখানায় অক্সিজেন বোতলজাত করার সময় অতিরিক্ত চাপের কারণেই এ বিস্ফোরণ ঘটেছে।
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস জানান, সীতাকুন্ডে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে ওইদিন রাতেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রাকিব হাসানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ওই কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে তদন্তে দুইদিন সময় বাড়ায় কমিটি।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই প্ল্যান্ট ও পাশের তিনতলা অফিস ভবনে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের পাশে অফিসভবনসহ আশেপাশের কয়েকশ ভবনের কাঁচের দরজা-জানালা ভেঙে পড়ে। ধসে পড়ে অফিসের ইটের দেয়াল। তাছাড়া বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে উঠে আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। আশপাশসহ আধা কিলোমিটার দূরেও ছিটকে পড়ে অসংখ্য লোহার টুকরো।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭ জন নিহত ও ২৫ জন আহতে হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরেও আহত অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কানে কম শুনছেন কদমরসুল এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ। নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি।