মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে তৈরি হচ্ছে ছোট মাপের ইট। এই ইট কিনে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন ঠিকাদার ও বাড়ি নির্মাতারা। উপজেলার অবৈধ ইটভাটায় এই মৌসুমে উৎপাদিত লক্ষ লক্ষ ইট বিক্রয় করে ক্রেতাদের ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা লুফে নিচ্ছেন ভাটা মালিকরা, এতে তাদের পকেট দিনকে দিন ভারীই হচ্ছে।তবে অজানা কারনে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে। জানা যায়,সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রতিটি ইটের আকার হওয়ার কথা দৈর্ঘ্য ২৪ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ও উচ্চতা ৭ সেন্টিমিটার। অথচ উপজেলার প্রতিটি ভাটায় ইটের আকার রয়েছে দৈর্ঘ্য ২০ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৮ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ও উচ্চতা ৫ সেন্টিমিটার। আকার ছোট হওয়ায় একজন ক্রেতা প্রতি হাজারে ২৮৪টি ইট কম পাচ্ছেন। ভাটা মালিকরা বছরের পর বছর ধরে এভাবে ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, হরিরামপুর উপজেলায় তিনটি ইটভাটা রয়েছে। তিনটি ভাটাই অবৈধ। ভাটা তিনটি উপজেলার বলড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। ভাটাগুলো হচ্ছে সততা ব্রিকস, আমিন ব্রিকস ও স্বাধীন ব্রিকস। ইট তৈরি ও পোড়ানোর মৌসুমের শুরুতেই আবারও চালু করা হয়েছে দুইটি অবৈধ ইটভাটা। ঝিটকা এলাকার বাসিন্দা সাগর ব্যাপারী জানান, তাঁর ১৬০০ বর্গফুটের দুই ইউনিটের ভবন করতে প্রকৌশলীর কাছ থেকে ড্রয়িং, ডিজাইন করান। নির্মাণসামগ্রীর পরিমাণগত নির্দেশনা ও প্রাক্কলন ব্যয়ের ধারণা নিয়ে বাড়ির কাজ শুরু করেছেন। ৪০ হাজারের স্থলে তাঁকে কিনতে হয়েছে ৫০ হাজার ইট। এখানে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে। ঠিকাদাররা জানান, সরকারি কাজ করতে গেলেই এখন লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। সরকারিভাবে ইটের যে দাম দেওয়া হয়, তা থেকে ৪-৫ হাজার টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ইটের দাম অনেক বেড়েছে। দরপত্র অনুসারে, ইটের সংখ্যা ধরে কোনোভাবেই কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। সড়ক কিংবা ভবন নির্মাণে ইটের সংখ্যা বেশি লাগছে। ইট ভেঙে খোয়া তৈরির সময়ও পরিমাণে বেশিসংখ্যক ইট লাগছে। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ঠিকাদারি বন্ধ করে দিতে হবে। এ বিষয় স্বাধীন ব্রিকসের মালিক শিতল চৌধুরী বলেন, আমরা এখনো ভাটার কাগজ পাইনি। মানিকগঞ্জের সব ভাটার ইটের সাইজ একরকম। মানিকগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, ইটের সাইজ নিয়ে নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে। হরিরামপুরেও অভিযান করা হবে।