কুড়িগ্রামের উলিপুরের উত্তর দলদলিয়া সরকার পাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের পুত্র হত-দরিদ্র দিনমজুর ইয়াকুব আলী (৪২) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন।
অপারেশনের ২ লাখ টাকা জোগার করতে না পেরে সে এভাবেই ধুঁকে ধুঁকে মরছে। ডাক্তার বলেছেন, ১৫ দিনের মধ্যে তার হার্ডের অপারেশন করাতে। তা না হলে হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালন না হওয়ার কারণে তার মৃত্যুর আশঙ্খা রয়েছে।
এ অবস্থায়, সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যাক্তি বা দাতব্য সংস্থার প্রতি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন অসুস্থ্য ইয়াকুব আলী পরিবার।
জানাযায়, অসহায় ভূমিহীন দিনমজুর ইয়াকুব আলীর সংসার চলে দু’হাতের উপর। ইয়াকুব ছোট থেকে অন্যের বাড়ীতে কাজ করে অতিকষ্টে তার আজীবনের উপার্জনের টাকা দিয়ে ঐ গ্রামের একটি দূর্গম স্থানে ৩ শতক জমি কিনে সেখানে একটি ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে কোন মতে মাথা গুজার ঠাই করে নিয়েছে।
রুগ্ন শরীরে এখন আর তেমন কাজ-কর্ম করতে না পারায় স্থানীয় খয়রুলে তেমনী নামক বাজারে চটি দোকানে পান বিক্রি করে যা আয় হতো তা দিয়েই কোনমতে বাড়ীতে স্ত্রী-দু’কন্যা সহ মোট ৪ সদস্যের পরিবারটি অনাহারে-অধ্যাহারে জীবন চালিয়ে আসতো।
এখন তা বন্ধ হওয়ায় অতি কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছে তারা। এমতাবস্থায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি/২৩ইং দিবাগত-রাত আনুমানিক ১২ টায় অসুস্থ্য ইয়াকুব আলী গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পরে। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রতিবেশীদের সহায়তায় উলিপুর থানামোড়স্থ ডিজিটাল ল্যাব এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে নিয়ে আসেন।
সেখানে কর্তব্যরত ডাঃ রফিকুল ইসলাম সরদার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার শরীরের অবস্থা আশঙ্খাজনক হওয়ায় দ্রুত রংপুরে নেয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে, কোন এক মাধ্যমে ইয়াকুব আলীর স্বজনরা জানতে পায় উলিপুরস্থ ডক্টরস্ ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ঢাকা থেকে আগত হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিভাস কুমার শীল বসেছেন। পরে তারা সেখানে এসে ঐ ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হন। ওখানে ইয়াকুবের শরীর পুনোরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এতে জানাযায় ইয়াকুবের দু’টি হার্ডই ব্লোক হয়েছে। তাই তার হার্ড অপারেশন করা জরুরী বলে ডাঃ বিভাস কুমার শীল ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেন।
অন্যথায় রক্ত সঞ্চালণ জনিত কারণে ইয়াকুবের মৃত্যুর আশঙ্খা রয়েছে। আর যখন জানতে পায় এ অপারেশন করতে ২ লক্ষাধীক টাকা লাগবে, তখনেই নেমে আসে তার জীবনে ঘোর অন্ধকার। এমনিতেই বাড়ীতে দু’বেলা দু’মুঠো আহার জোটেনা, তার উপর আবার ঔষধ কিনতে হয়। ইয়াকুব অসুস্থ্য হওয়ার পর তার স্ত্রী আবেদা বেগম অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে দুই কন্যার ভরন-পোষণ, দু’বেলার খাবার আর অসুস্থ্য স্বামী নিত্যদিনের ঔষধ কিনতে অনেক ঋণ ধার-দেনা করেছেন ।
এখন স্বামীর জীবন বাঁচাতে ২ লাখ টাকা সে কি ভাবে জোগার করবে তার কুল কিনারা পাচ্ছেনা। এখন মাথা গোজার শেষ সম্বল বাড়ী-ভিটের ৩ শতক জমি টুকু ছাড়া তার আর কিছু নেই। আর সেটা বিক্রি করেই বা কতো টাকা হবে। বড় জোর ৩০ হাজার টাকা। কেঁদে কেঁদে একথা গুলো সাংবাদিকদের বলছেন ইয়াকুব আলীর স্ত্রী আবেদা বেগম ।
তার পরেও তো অনেক টাকার দরকার। ছোট মেয়ে সেবা আক্তার ১ম শ্রেণিতে পড়ছে। সেও মায়ের সাথে হাপছেড়ে কেঁদে কেঁদে আকুতি জানাচ্ছে। বলছে, “কাকু আমার বাবারে বাঁচান।” কেউ কি আছেন, এ সমাজে, এই অসহায় পরিবারটির পাশে দ্বারাতে? যদি কোনো হৃদয়বান ব্যাক্তি থাকেন তাহলে ০১৭৬৭৫৮৩৩৬ এই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে দেই।