খাগড়াছড়ির মাইসছড়িতে স্ট্রবেরী চাষ করে সফলতা পেয়েছেন থৈইহলাসাই মারমা। প্রথম প্রথম সুবিধা করতে না পারলেও দুয়েক বছর ধরে ভালো সফলতা পেয়েছেন তিনি। তাঁর এই সফলতা দেখে উৎসাহিত হয়েছেন অন্য কৃষকরাও। থৈইহলাসাই মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি মানিকছড়ি মূখ পসাই কার্বারী পাড়ার গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, জেলায় স্ট্রবেরী চাষ করে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন। তার উৎপাদিত পণ্য নাম দেওয়া হয়েছে উইন্টার স্ট্রবেরী। মাইসছড়ি এলাকার মাটিতে স্ট্রবেরী চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক থৈইহলাসাই মারমা। তার উৎপাদিত স্ট্রবেরী স্বাদের দিক দিয়েও বেশ মিষ্টি। দৈনিক নবচেতনার সাংবাদিক থৈইহলাসাই সাথে সাক্ষাত করে জানতে পারলাম, ৮ বছর আগে কইল্যাছড়ি বেড়াতে গিয়ে স্ট্রবেরী বাগান দেখে তার শখ হয়েছে চাষ করার। পরে স্ট্রবেরী চাষের সিন্ধান্ত নেন। কইল্যাছড়ি থেকে চারা ক্রয় করে রোপণ করলেও একটা সময় চারা গুলো মারা গেছে। এর পর নরসিন্দী থেকে ৫০ টি স্ট্রবেরী চারা সংগ্রহ করে ৫ শতক জমিতে রোপণ করেন। অভিজ্ঞতা না থাকায়, প্রথম দুয়েক বছর চাষে তেমন ভালো ফলাফল অর্জন করতে না পারলেও লোকসান হয়নি। উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে গেলে কিসের ফল মানুষ তেমন জানা ছিলনা, পরিচয় নাই তাদের। তবু হতাশ না হয়ে আবারও স্ট্রবেরী চাষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এরপর নিজেই চারা উৎপাদন ও সংরক্ষণ করেন। বর্তমানে তার প্রায় ১ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরী চাষ হয়। অল্পদিনেই ক্ষেতে স্ট্রবেরী গাছ সবুজ হয়ে উঠেছে। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে শেষের দিকে ক্ষেত থেকে স্ট্রবেরী ফল সংগ্রহ শুরু হয়। প্রথম দফায় ৪ কেজি ফল সংগ্রহ হয়, এরপর থেকে দুইদিন পর ১০ কেজি পাওয়া য়ায়। এভাবে ক্ষেতে বাড়তে থাকে স্ট্রবেরীর উৎপাদন। একই গ্রামের বাসিন্দা সাজাউ মারমা ও মো. সাইফুল বলেন, স্ট্রবেরী ফলের গাছে থোকায় থোকায় লাল, সবুজ ফলন দেখতে যেমন সুন্দর, ঠিক তেমনি ফলও সুস্বাধু। তাঁর ক্ষেতে উৎপাদিত স্ট্রবেরী এখানকার জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবারাহ করা হচ্ছে পাশের জেলা রাঙামাটিতেও তাছাড়া অনলাইনে মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। এতে দামও ভালো পাওয়া যায়। প্রতি কেজিতে স্ট্রবেরী ১১০০ থেকে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত পাইকারী দরে বিক্রি করেছন তিনি। চলতি মৌসুমে ওই পরিমাণ জমির জন্য শ্রমিক কীটনাশক, সেচ ও জাল যাবতীয় খরচ বাবদ প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৫-৪০ বার সেচ দিয়েছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করেছেন কৃষক। তাছাড়া স্ট্রবেরী পল সংগ্রহের পর তা পরিবারের সদস্যরা মিলে বক্সে প্যাকেটজাত করে খাগড়াছড়ি থেকে দূর পাল্লার বাসে করে পাঠানো হয়। কাছে হলে নিজে গিয়ে পৌছে দেয় মাঝে মধ্যে। খাগড়াছড়ি হর্টিকালচারের উপ- পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার জানান, স্ট্রবেরী রসালো ফল, স্বাদে অতুলনীয়। স্ট্রবেরীর চাহিদা ব্যাপক থাকায় দিন দিন এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ফলন যেন ভালো হয় এবং কৃষকরা যেন আরও এ চাষে উদ্ধুদ্ধ হয় স্ট্রবেরী চাষ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান কৃষি বিভাগ।