কুষ্টিয়ায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে চার রাস্তা মোড়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের লীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান লাবু। বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাজী রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশা, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সদর ছাত্রলীগ, শহর ছাত্রলীগ, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। সভাপতির বক্তব্যে স্বেচ্ছাসেবকলীগের লীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান লাবু বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না দিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের ঘায়েল করতে এই মামলার অবতারণা বলে সাধারণ মানুষ মনে করছেন। বিএনপির কর্মী এই ব্যক্তির মামলাকে তার ঝোপ বুঝে কোপ মনে করছি আমরা। জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই একটি চক্র কুষ্টিয়া শহরে আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী শূন্য করতে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে। জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং দৈনিক আরশীনগর পত্রিকার সম্পাদক হাজী রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, যারা শিডিউল কেড়ে নিয়েছে তারা আমাদের পত্রিকায় নিজের নাম সহ বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে বেলা ১টা পর্যন্ত সিডিউল ফেলার শেষ সময় ছিল। উনি ১টা ২০ মিনিটের সময় সিডিউল ফেলতে গিয়েছিলেন। তখন আমরা বাধা দিয়েছিলাম। মিরাজের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল আপনি কেন ডিসি, এসপি অফিসে সিডিউল ফেলেননি কারণ হিসাবে মিরাজ জানান, ‘নির্ধারিত সময়ে ডিসি ও এসপি অফিসে টেন্ডার বাক্স সিলগড়া করে আটকে দেওয়া হয়।’ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাবলীগ ছাত্রলীগ বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণীত ভাবে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মিথ্যা মামলা দেওয়া হইছে। এই মামলার যে বাদী ইব্রাহিম হোসেন। তার একটি কুষ্টিয়ার কোটপাড়ার আরসিআরসি রোডের বারোশরীফের সামনে ট্রেনিং সেন্টার আছে। তিনি সকাল হলে দেখবেন ঢাকা রোডে এবং নিশান মোড়ে ড্রাইভিং শেখান। সে ব্যক্তি কোনদিন কোথাও হাটবাজারে অংশগ্রহণ করেছে এবং কোথাও হাটবাজারের ইজারা নিয়েছে এমন কোন রেকর্ড নেই। ফেসবুকের লাইভে তাকে দেখা যাচ্ছে, পৌরসভার সিডিউল জমা দিতে গিয়ে ধস্তা ধিস্ত করছে। বক্তারা আরো বলে, যখন তিনি জানলেন সবাই বাধা দিচ্ছে। টেন্ডার বক্স পুলিশ লাইনে ছিল, ডিসি অফিসের ছিল আপনি সেখানে কেন আপনার সিডিউল ফেলতে গেলেন না?। আপনি সিডিউল ফেলতে যাননি। আপনি গেছেন ওখানে আওয়ামী লীগ নামে মামলা পরিকল্পনার নিয়ে। আপনারা যে ফেসবুকে লাইফ দিয়েছেন সিডিউল ধস্তা ধস্তিতে সেই লাইভে যাদের নামে মামলা দিয়েছেন, তারা অনেকেই সেখানে ছিলেন না। অথচ যারা আপনার হাত থেকে সিডিউল কেড়ে নিচ্ছে তাদের নামে আপনি মামলা করেননি। মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন পৌরসভার অসৎ কর্মকর্তাদের সাথে হাত করে কেন নির্ধারিত সময়ের পরে ওই টেন্ডার বাক্স ওপেন থাকবে। পৌরসভার একজন নির্বাহী কর্মকর্তা আছে। তিনি দুদকের মামলায় স্বামী- স্ত্রীর জেল খেটে বের হয়েছে। টেন্ডারে নির্ধারিত সময়ে পরেও বাক্স খোলা থাকার ঘটনায় সেই প্রকৌশলী জড়িত ছিল। তিনি( নির্বাহী প্রকৌশলী) কি করলেন, সেই ঘটনার রাতে পৌরসভার মেয়রের কার্যালয় চুরি ও ভাঙচুর করালেন। সেই চুরি ঘটনাতেও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণীত ভাবে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেন। আওয়ামী লীগের মধ্যে ঘাপড়ে থাকা বিএনপির জামাতের এজেন্টার বাস্তবায়নের জন্য একটি কুচক্র মহল কুষ্টিয়ার মানুষের মনে জাতীয় নির্বাচনে আগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ বিরুদ্ধে মানববন্ধনের নামে বিষাদগার করছে। অথচ পৌরসভার চুরির ঘটনায় ওই দিনের দায়িত্বরত নাইটগার কেয়ারটেকারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল। যদি সরিষার মধ্যে ভূত থাকে সেই ভূত তাড়াবে কে। মানববন্ধনের বক্তারা এমনটাই দাবি করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পৌরসভার যে নথি হারিয়েছে সেটা কোন নথি।সেটা চুরি করা নয়, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দুদকের আসামি। দুদুকে যে মামলা হয়েছে। তার তদন্তে বাধাগ্রস্ত করতেই চুরির এই নাটকীয়তা সাজানো হয়েছে। মানববন্ধনে শত শত যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন ফেস্টুন ছিল। ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত ভেঙ্গে দাও পুড়িয়ে দাও’ ‘ষড়যন্ত্রকারদের মুখোশ উন্মোচন হোক’ ‘অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি চাই’। প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এই ধরনের অনেকগুলো লেখা ফেস্টুন তাদের হাতে ছিল। উল্লেখ্য চলতি বছরের হাটবাজার ইজারা দেওয়ার জন্য গত ২৫ জানুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১০টির মধ্যে ৭টি বাজারের ইজারা নেওয়ার জন্য দরপত্র কেনেন ইব্রাহিম হোসেন তাঁর কয়েকজন সহযোগী। সে সময় টেন্ডার ছিনতাই অভিযোগ উঠে। টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগে রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। টেন্ডার ছিনতাইয়ের অভিযোগে ভুক্তভোগী ইব্রাহিম হোসেনের করা মামলায় ৬জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের নামে মামলা করা হয়। টেন্ডার ছিনতাইয়ের অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে করা মামলার এজাহারভুক্তরা হলেন কুষ্টিয়া পৌর সভার ০৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ কৌশিক আহমেদ, ০৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আফিল উদ্দিন, কুষ্টিয়া শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী, সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফেরদৌস খন্দকার সহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন।