অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী তাসনোভা জেরিন উলফাতের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গবেষণা গ্রন্থ ‘একাত্তরে কুমিল্লা: বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া’।
আহমদ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত গ্রন্থটি ঢাকার অমর একুশে বইমেলার ৩২৩,৩২৪, ৩২৫ ও ৩২৬ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।
‘একাত্তরে কুমিল্লা: বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া’ গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শিরোনামের অভিসন্দর্ভে উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলী ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চারটি অংশকে গবেষণায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর প্রথমটি হলো, উপজেলার অসহযোগ আন্দোলন, দ্বিতীয়টি হলো বিভিন্ন গ্রামে সংগঠিত সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধ, তৃতীয়টি হলো গণহত্যা ও নির্যাতন, চতুর্থটি হলো একাত্তর ও নারী। মুক্তিযুদ্ধ চর্চা পদ্ধতিতে এই চারটি বিষয়বস্তরই সমান গুরুত্ব রয়েছে বাংলাদেশে।
একাত্তরে সমগ্র কুমিল্লা জেলার পরিস্থিতি তুলে আনা হয়েছে বইটিতে। অসহযোগ আন্দোলনে কুমিল্লার যেসব স্থানে মিছিল মিটিং করা হয়েছে সেই সব স্থানের বর্ণনা, ২৫ শে মার্চ পুলিশ লাইন আক্রমণ ও শহরবাসীর অবরুদ্ধ জনজীবনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গ্রামীণ সমাজ ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাজার-হাট ও দ্রব্যমূল্যের সারণী দেওয়া হয়েছে বইটিতে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ: সশস্ত্র প্রতিরোধ। উপজেলায় সংগঠিত মুকি্তিযুদ্ধকালীন অসহযোগ আন্দোলন কিভাবে শুরু হয় এবং ক্রমেই তা কৃষক, শ্রমিক, ছাত্রদের মধ্যে বিস্তার লাভ করে তা নিয়ে আলোচনা করা রয়েছে। প্রতিরোধ প্রস্তুতি, ব্রাহ্মণপাড়ায় পাকিস্তান বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় সংগঠিত সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধের বিবরণ, যুদ্ধের তারিখ, যুদ্ধ পরিকল্পাণাকারী ও অংশগ্রহণকারীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে।
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে নারীর দৈনন্দিন কার্যকলাপ, আত্মরক্ষার কৌশল, শরণার্থী নারী, যুদ্ধকালীন নারীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্তানসম্ভবা মহিলাদের স্বাস্থ্যসেবা, নারীর পরিবার ও মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধে নিঃস্ব নারীর সংসার, গ্রামে রাজাকারদের কার্যক্রম ও নারীর মানসিক ভীতি সম্পর্কে এই বইটিতে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
তাসনোভা জেরিন একজন তরুণ মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও প্রাবন্ধিক। তাঁর জন্ম কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলায়। পিতার চাকরিসূত্রে তাঁর শৈশব কেটেছে হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী তিনি। মূলত: বিভাগের স্নাতক পর্যায়ে দেওয়া অভিসন্দর্ভের পরিবর্ধিত রূপ এ গবেষণা গ্রন্থটি।