মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম এলাকায় ৪ বছরের এক শিশু ধর্ষণের ঘটনা টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান মো: আলীনুর বকস্ (রতন) ও সাটুরিয়া থানার এসআই মো: মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে।
শিশুটির মা জানায়, আমরা কুষ্টিয়া থেকে এসে চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমার স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। আমার ৪ বছরের শিশু গত সোমবার দুপুরে প্রতিবেশী আরেকটি শিশুর সঙ্গে চকে যায়। এ সময় একই গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মামুন (৩২) প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আমার কাছে অভিযোগ করে বলে মামুন কাকা আমাকে ব্যাথা দিয়েছে। কোথায় ব্যাথা দিয়েছে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলে তখন তার গোপন অঙ্গ দেখায়। তখন আমি মেয়েটির গোপন অঙ্গ দেখে চেয়ারম্যানের মা ও বউকে দেখাই।
এলাকাবাসী জানায়, পর্যায়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ষণের খবর পৌঁঁছলে সুকৌশলে তারা মেয়েটির পরিবারকে থানার এসআই মুক্তার হোসেনকে দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় ও ধর্ষন হয়নি মর্মে ভিডিও ধারন করেন। ছেলের বাবা,চেয়ারম্যান ও এসআই মুক্তার হোসেন টাকার বিনিময়ে আপোষ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছেলের বাবা নূরুল ইসলামের সাথে সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে কথা বললে তিনি বলেন,গত সোমবার আমার ছেলের সাথে মেয়েলী একটা সমস্যা হয়েছিল তা চেয়ারম্যান ও থানার পুলিশ মীমাংসা করে দিয়েছে। কত টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,চেয়ারম্যান যত টাকা দিতে বলেছে, আমার ছেলে তত টাকাই পুলিশকে দিয়েছে।
দরগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আলীনুর বকস্ প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে বলেন, তাদের মাঝে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল আমি বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি।
সাটুরিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো: মুক্তার হোসেন বলেন, ঘটনাটি লোকমুখে শোনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে সেখানে গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার জানান এ রকম কোন ঘটনা ঘটেনি। আর তারা কোন অভিযোগ দিতে রাজি হয়নি। অভিযোগ দেয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনা শোনার পর ঘটনাস্থলে এসআই মুক্তার হোসেনসহ ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। এ রকম কোন ঘটনা ঘটেনি বলে সরেজমিনে ভুক্তভোগীর পরিবার জানান। এ বিষয়ে আগামীকাল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)সহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, যদি ঘটনা সত্য হয়ে থাকে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন