পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়নমূলক সকল কাজের বিষয়ে অবগত আছেন। কোথায় কী হচ্ছে সবকিছুর খবর তিনি রাখেন। তাই সরকারের উন্নয়ন কাজে কোনো প্রকার ওজর আপত্তি চলবে না বলে জানালেন পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি সংশ্লিষ্টদের প্রতি এ নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং এমপি আরও বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের হিসাব সঠিকভাবে রাখতে হবে। তিনি বলেন, উন্নয়নের কাজ কতটুকু হলো, আর কতটুকু বাকি আছে তা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের মনিটরিং করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্যই সরকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে থাকে। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, পাড়াকেন্দ্রগুলোর প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, পাড়াকেন্দ্রের ঘরগুলো মেরামত ও নতুনভাবে নির্মাণ করা দরকার। তিনি পাড়াকেন্দ্রে বসবাসকারী সকলকে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সোলার প্যানেল বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে মিশ্র ফল চাষ, কফি, কাজুবাদাম, তুলা, ইক্ষু ও মসলা চাষ কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিবে। পার্বত্য তিন জেলায় মিশ্র ফল চাষ, কাজু বাদাম, কফি, ইক্ষু ও মসলা চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রেখে পরিকল্পিত উপায়ে বাগান সৃজন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তিন পার্বত্য জেলায় সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে বাগান সৃজন করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। এক্ষেত্রে জুম চাষকে ঠিক রেখে বন সৃষ্টি, পানির উৎস বের করা ও পরিকল্পিত উপায়ে বাগান করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। মন্ত্রী জুনের মধ্যে উন্নয়নমূলক কাজ দৃশ্যমান করার বিষয়ে এখনই তৎপর হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম বলেন, সংশ্লিষ্টদের কাজের গতির দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ফাইলিং কাজ ফেলে রাখা বা বিলম্ব করা অপরাধ। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন সচিব। সভায় তিন পার্বত্য জেলায় কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প, মিশ্র ফল চাষ এবং মসলা চাষ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাস্তবায়নাধীন এডিপিভুক্ত প্রকল্প ও উন্নয়ন সহায়তার বাস্তবায়ন অগ্রগতি, পর্যালোচনা, প্রকল্পসমূহের বরাদ্দ ও ব্যয়ের সার্বিক অগ্রগতি প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম এর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যেন্দ্র কুমার সরকার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আলম চৌধুরী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম (এনডিসি), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ, সদস্য, বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, সদস্য, প্রশাসক ও প্রকল্প পরিচালক ইফতেখার আহমেদ, মো. জসিম উদ্দিন, সদস্য, পরিকল্পনা ও প্রকল্প পরিচালক কফি ও কাজু বাদাম চাষ এবং ইউএনডিপি’র এসআইডি-সিএইচটি’র জাতীয় প্রকল্প পরিচালক সুপ্রদীপ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।