
ডিসিসিআই সভাপতি মোঃ সামীর সাত্তার, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহবান জানান এবং বলেন যে, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর পাশাপাশি আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ঋণপত্র নিষ্পত্তিতে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করার জন্যও বাংলাদেশ ব্যংক-এর প্রতি আহবান জানিয়েছেন ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার।
গত ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক-এর গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসে ডিসিসিআই’র নব-নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহবান জানান।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার সময়োপযোগী মুদ্রানীতি ঘোষণা করায় বাংলাদেশ ব্যাংক কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে উল্লেখিত সহায়ক নীতি এবং নির্দেশিকা দেশের বেসরকারিখাতের পাশাপাশি আর্থিক খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। তিনি কৃষি, সিএমএসএমই এবং আমদানি বিকল্প শিল্পের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প অব্যাহত রাখার উদ্যোগকেও স্বাগত জানান। সেই সাথে দেশের সিএমএসএমই খাতের স্বার্থে ঋণ সহায়তা প্রাপ্তিতে এবং ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদানের প্রক্রিয়া সহজীকরণ সহ প্রয়োজনীয় সংষ্কারের আহবান জানান। এছাড়াও, তিনি তরুণ এবং উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলির জন্য ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া সহজ করার আহবান জানান যাতে তারা সহজে ঋণ পেতে পারে।
বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, অর্থনীতি পুনঃরুদ্ধারে বেসরকারিখাতের অবদান কে বৃদ্ধি করতে বেসরকারিখাতে ঋণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
এছাড়াও, তিনি নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) নিয়ন্ত্রণে সুশাসন নিশ্চিত করার পরামর্শ দানের পাশাপাশি অভ্যাসগত খেলাপীদের কথা মাথায় রেখে দ্রæত ঋণ পুণঃরুদ্ধারের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ সহ ব্যাংকিং আইনে প্রয়োজনীয় সংষ্কারের পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমাদের অর্থনীতি বর্তমানে ৩টি প্রধান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, সেগুলো হলো: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃক সুদের হার বৃদ্ধি এবং চীনের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি। তবে তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সত্বেও আমাদের অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল। আগামী দু-এক মাসের মধ্যে এলসির বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। তিনি নিশ্চিত করেন যে, আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এলসি মার্জিন নূন্যতম করা সহ বেশকিছু নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু নীতিগত পরিবর্তন এনেছে, যার মধ্যে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানের বিধান শিথীল করা, স্থানীয় ব্যাংক কর্তৃক ফি মওকুফ এবং রেমিট্যান্স আহরণে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) কে সম্পৃক্ত করা উল্লেখযোগ্য। যার ফলে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বৃদ্ধি পাবে।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মোঃ জুনায়েদ ইবনে আলী সহ পর্ষদের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।