কুষ্টিয়া কানা বিলের মোড়ের একটি গোডাউন থেকে ২৬০ বস্তা ধান উদ্ধার করেছে পুলিশ। এবিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেছেন ধান মালিক আনিছুর রহমান খোকন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানাধীন কবসা সাগরপুর মৃত তাছের উদ্দিনের ছেলে আনিছুর রহমান খোকন একজন ধান ব্যবসায়ী। তার নিজের ট্রাক না থাকায় বিরামপুর দালাল অফিস থেকে একটা ট্রাক ভাড়া করে দিনাজপুর মেসার্স দরদী অটোরাইসমিলে পাঠান। সেই ট্রাকের রেজিঃ নং কুষ্টিয়া-ট-১১-১৫১৫। ট্রাকে মোট ২৬০ বস্তা সম্পাকাটারী ধান (জার মূল্য ৭লক্ষ ৩৭ হাজার ৭ শত ৬ টাকা) ছিল। রাত ৮ টার সময় ধান বোঝাই করে দিনাজপুর মেসার্স দরদী অটোরাইসমিলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরবর্তীতে ১৬ জানুয়ারি সকাল ১১ টার সময় মেসার্স দরদী অটোরাইসমিলে যোগাযোগ করে জানতে পারেন ধান বোঝাই ট্রাক মিলে পৌঁছাইনি।
পরক্ষনেই ট্রাক ড্রাইভার কুষ্টিয়া আন্ত জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্রাংক লরি, কাভার ভ্যান (দাহ্য পদার্থ ব্যতীত) রেজিঃ নং ২৩০৬ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফের ভাই আব্দুল ওহাবের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পরবর্তীতে দালাল অফিসের আখের আলীর মুঠোফোনে কল দিলে সে জানান গাড়ি পামসার হয়েছিল তাই দেরি হয়েছে। এখন গাড়ি মোহনপুর ব্রীজ পার হচ্ছে। তখন সন্দেহ হলে দালাল অফিসের হীরা ও অনিক মটরসাইকেল যোগে বিরামপুর থেকে দিনাজপুর মেসার্স দরদী অটোরাইসমিল পুলহাটা পর্যন্ত গেলে রাস্তায় কোথাও ট্রাক না পেয়ে ফিরে আসে।
পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারেন ট্রাকটি থেকে ধার আনলোড করা হয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানাধীন কানা বিলের মোড়স্থ খলিলুর রহমানের গোডাউনে রয়েছে। এরপরক কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ চুরিকৃত ধান উদ্ধার করে।
সরজমিনে খলিলুর রহমানের গোডাউনে গিয়ে জানা যায়, গতকাল (সোমবার) দুপুরে ৫ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করে ভাড়া নেন কুষ্টিয়া আন্ত জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্রাংক লরি, কাভার ভ্যান (দাহ্য পদার্থ ব্যতীত) রেজিঃ নং ২৩০৬ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ ও লতিফের ভাই ওহাব। সেই দিন বিকেলে ওই গোডাউনে ধান আনলোড করা হয় বলে এলাকাবাসী জানায়।
মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানাপুলিশ গোডাউনে অভিযান চালিয়ে চুরি হওয়া ধান উদ্ধার করে।
জানা যায়, ট্রাকটির মালিক কুষ্টিয়া আন্ত জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্রাংক লরি, কাভার ভ্যান (দাহ্য পদার্থ ব্যতীত) রেজিঃ নং ২৩০৬ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ। তিনি একটি ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ব্যবহার করে ধান চুরি করে এনেছে।
এবিষয়ে আব্দুল লতিফের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কুষ্টিয়া-ট-১১-১৫১৫ নাম্বারের গাড়িটি শোরুমে জমা দেওয়া হয়েছে। যেই গাড়িতে ধান আনা হয়েছে সেই গাড়ির নাম্বার পরে বলছি। ধান চুরির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, দালাল অফিসের লোকের সাথে আমার ভাইয়ের কথাকাটাকাটি হয়। এসময় দালালরা আমার ভাইয়ের কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। সেই রাগে সে ধান নিয়ে চলে এসেছে। প্রায়ই ট্রাক সহ ধান, চাল সহ বিভিন্ন মালামাল চুরির ঘটনা শোনা যায়।
এলাকাবাসী জানায় চুরি সিন্ডিকেটের মুল হোতা আপনি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে ব্যবসা করছি। এমন কোন অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে নেই। এবার প্রথম এমন অভিযোগ উঠল।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন চুরি হওয়া ধান উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানায় মামলা হলে তারা গ্রেফতার করবে।
বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার মহন্ত বলেন ধান চুরির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তবে উদ্ধার হয়েছে কিনা বলতে পারবোনা। আমি এখন ছুটিতে আছি।