টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে ফসলি জমিতে মাটি কাটার মহোৎসব। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে ফসলি জমিতে মাটি কাটার প্রতিযোগিতা।
জানা যায়, মধুপুরে মাটি ব্যবসায়ী সমিতির মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় চলছে ফসলি জমিতে মাটি কাটা। মাটি ব্যবসায়ীগন সমিতির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা দিয়ে অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে বেকু বসিয়ে ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয় ইট ভাটায়। ফলে কৃষি জমি আবাদে অনুপযোগী হয়ে পড়ছে বলে জানান ভুক্তভোগী কৃষকগন।
মাটি ব্যবসায়ীগন কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে এক ফিট গর্ত করে মাটি কাটার কথা বলে ৩/৪ ফিট গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নিচ্ছে যার ফলে পাশের ফসলি জমি সেই গর্তে ভেঙে বিলীন হয়ে পড়ছে। পরবর্তীতে সেই আবাদি জমির মাটি বিক্রি করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা কৃষকের।
এভাবেই কৃষকের হাজার হাজার একর ফসলি জমি ডোবা নালায় পরিনত হচ্ছে। দিনরাত মাটির গাড়ি যাতায়াতের কারণে এলাকার নতুন পাকা রাস্তা ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
বিশেষ করে উপজেলার কুড়ালিয়া, আলোকদিয়া, আউশনারা, মহিষমারা, মির্জাবাড়ী, পিরোজপুর, কুড়াগাছা, গোলাবাড়ি ইউনিয়নসহ পৌরসভা এলাকায় চলছে ফসলি জমিতে মাটি কাটার প্রতিযোগিতা।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, দিনরাত মাটির গাড়ি চলাচলের কারণে ঘরবাড়ি দোকানপাট রান্না করা খাবার ধূলায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব খাবার খেয়ে ছোট বড় সব বয়সের মানুষের ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। কুড়ালিয়া কেওটাই এলাকার গ্রামবাসী রাস্তায় শুয়ে মাটির গাড়ি বন্ধের জন্য প্রতিবাদ জানায় পরে সেই পয়েন্ট থেকে বেকু উঠিয়ে নিতে বাধ্য হয় মাটি ব্যবসায়ীগন। কুড়ালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ মাটির গাড়ি চলাচল বন্ধ না করলে অচিরেই মানববন্ধন করে এর প্রতিবাদ জানাবে বলে জানান।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, এ বছরের মতো ফসলি জমিতে মাটি কাটার মহোৎসব অতীতে আর চোখে পড়েনি। এ বছর প্রশাসনিক ভাবে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে মাটি ব্যবসায়ীগন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জায়গাও অনাবাদি রাখা যাবেনা, সেই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে কাদের অনুমতিতে এই আবাদি জমির মাটি কাটা হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রশাসন এ বিষয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না করলে দেশের কৃষিখ্যাত ধ্বংসের মুখে পড়বে বলে জানান বিশিষ্টজনেরা।