যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে মৃত প্রবাসী বাংলাদেশিকে নিয়ে ফেসবুকে কটুক্তির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। নিউইয়র্স্থ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি দাওয়াতপত্র তার পরিবারের সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়ার পর সেখানে মতামতের স্থানে একই সংগঠনের অপর একজন সাবেক সভাপতি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসহ মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে কটুক্তি করেন। এ ঘটনায় বিব্রতবোধ করলে গতকাল সন্ধ্যায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত আব্দুল হাই জিয়ার স্ত্রী শাহিদা শিকদার হাই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছে তার পরিবার। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
লিখিত বক্তব্যে শাহিদা শিকদার হাই বলেন, আব্দুল হাই জিয়ার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দাওয়াত করার জন্য আমার মেয়ে মুন হাই একটি দাওয়াত কার্ড তৈরি করে। ফেসবুকে কার্ডটি পোস্ট করার পর চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক নেতা মোহাম্মদ হানিফ কমেন্ট করেন-‘এই লোকটি চট্টগ্রাম সমিতি থেকে প্রায় দুই লাখ ডলার চুরি করেছে। কিন্তু আমরা জানি না টাকা কোথায়?
শাহিদা শিকদার বলেন, হানিফ সাহেব আমার স্বামী মরহুম আব্দুল হাই জিয়ার বিরুদ্ধে ফেসবুকে যে কমেন্ট করেছেন তা মিথ্যা অপপ্রচার ও সম্পূর্ণ বানোয়োট। এই কমেন্ট দেখেই অনেকেই আমাকে এবং আমার ছেলেদের ফোন দিচ্ছিল। আমি কোরান খতম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, তাই এই কমেন্ট আমার চোখে পড়েনি। কমেন্টটা পড়ে আমি এবং আমার ছেলে মেয়েসহ সবাই অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। দোয়া মাহফিলের পোস্টের ওপরে এ কেমন কমেন্ট? আমরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। আমার মেয়ে মুন ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, উনি যদি প্রমান করতে পারেন আমার স্বামী টাকা আত্মসাত করেছে, আমি সেই টাকা দিতে বাধ্য থাকবো। আর যদি প্রমান করতে না পারেন তাহলে আপনাদের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন। এটাই আমাদের দাবী। আর যদি হানিফ সাহেব সেটা থেকে বিচ্যুত থাকেন তাহলে এইটা আইনের দেশ। আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল, আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।
শাহিদা শিকদার আরও বলেন, আব্দুল হাই জিয়ার যখন সমিতিতে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন ওর কমিটিতে কিছু টাকা জমা ছিল। আবার যখন সমিতিতে ইলেকশন হওয়ার সময় আসলো ঠিক তখনই বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ কোভিড হানা দিল। ইলেকশনের প্ল্যান আর সমিতি করতে পারে নাই। এরপর থেকেই সমিতির টাকাটা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য জিয়াকে বিভিন্নভাবে মেন্টাল প্রেসার দেওয়া হয়েছিল। জিয়ার কথা ছিল- আমার কাছে যেই টাকা আছে, এই টাকা আমার নয়, সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর। যারাই চাইবে তাদেরকে আমি এই টাকা বুঝিয়ে দিতে পারি না। ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে যেই কমিটি আসবে আমি তাদেরকেই সব বুঝিয়ে দেব। তবে সেই সুযোগ জিয়া পান নাই।
আরেক অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আরেকটা কথা সব সময় কানে আসতো যে জিয়া নাকি আমার নামে সমিতির টাকা ট্রান্সফার করেছে। চ্যালেঞ্জ! এটা প্রমাণ করতে পারলে তিন ডাবল টাকা ফেরত দেব। সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত আব্দুল হাই জিয়ার ছেলে ইশরাক বিন হাই ও মেয়ে মুন জাবিন হাই উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি সিপিএ সরোয়ার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম এ জাফর, বেদারুল ইসলাম বাবলা, খোকন কে চৌধুরী, এম উদ্দিন ফোরকান, শাহাব উদ্দিন চৌধুরী লিটন, মোহাম্মদ নাজের উদ্দিন, মতিউর চৌধুরী, মো. সফিউল আলম শিকদার, মো. আশরাফ আলী খান লিটন, মো. আবুল কাশেম, বদিউল আলম, মো. শাহিনুর আলী, সৈয়দ শাকিল হক, হাফিজা হোসেন, নার্গিস রহমান, তুলি চৌধুরী, বিউটি ইয়াসমিন ও মো. ইমানুল হক, মো. হাসান।