ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নে মধ্য আড়পাড়া গ্রামে এসে ব্যস্ত সময় পার করছেন রস সংগ্রহের কাজে- বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার গাছিরা।
শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করে রস আহরণ শুরু করেছেন।
রস আহরণের জন্য প্রথমে হাতে দাও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছ চাছা-ছেলা করেন, পরে ছেলা স্থানে বাঁশের কঞ্চির নল বসানো হয়। সেই নল বেয়ে নেমে আসে সুস্বাদু খেজুর রস।
রাজশাহী জেলার গাছিরা ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া গ্রামে প্রতিবারে ন্যায় এবারও এসে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে গুড় ও পাটালি তৈরি করছেন।
পাখি ডাকা ভোর থেকে সকাল ৬-৭টা পর্যন্ত গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গাছিরা। সকাল ৯টা পর্যন্ত রস জাল দিয়ে গুড় ও পাটালি তৈরি করা হয়।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রস সংগ্রহের জন্য গাছে গাছে হাড়ি বাঁধা হয়। এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা।
গাছিরা জানান, খেজুরের রস পেতে হলে বেশ কিছু কাজ করতে হয়। গাছের উপরিভাগের নরম অংশকে কেটে সেখানে বসিয়ে দেয়া হয় বাঁশের তৈরি নালা। গাছের কাটা অংশ থেকে চুইয়ে-চুইয়ে রস এনে নল দিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় জমা হয় মাটির হাড়িতে।
রাজশাহী থেকে আসা গাছি জালাল, আকবর, ইদ্রীস আলী বলেন, আমি দেশে অনেক যায়গায় রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজে গিয়েছি কিন্তু আপনাদের আড়পাড়া গ্রামে আমরা যে, টাটকা রস ও প্রাকৃতিক পরিবেশে তৈরি গুড় পাচ্ছি যা গুড় অনেক সুস্বাদু এখানকার গুড় উপজেলা ও জেলা পেরিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানের ও বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এসে নিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় গুড় ব্যবসায়ী বাবলু শেখ জানান রাজশাহী থেকে ৩ জন গাছি দিয়ে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরি করা হচ্ছে। শীত বাড়লে গাছ থেকে রসের পরিমানো বৃদ্ধি পাবে এবং গুড় উৎপাদন বাড়বে। সারাদিন খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরি দেখতে ও গুড় কিনতে সারাদিন ভিড় করছেন শত শত ক্রেতা ও দর্শনার্থী।
তিনি আরও বলেন এবার রস বেশী হবে গত বারের চেয়ে যা কেজি প্রতি বিক্রি করা হয় ২৫০ টাকায়।
স্থানীয়রা জানান এ উপজেলার ইউনিয়ন গুলোতে খেজুরের গাছ রোপণের ক্ষেত্রে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না। সবাই আম, কাঁঠাল আর লিচু নিয়েই ব্যস্ত।
গাছিরা বলেন সব গাছেরই প্রয়োজন আছে। তারা খেজুর গাছ লাগানো বসতীদের স্বাগত জানান। তাই এই এলাকার মানুষের অন্যান্য ফলের বাগানের মাধ্যমে খেজুর গাছের বাগান করার আহবান জানান রাজশাহী অঞ্চলের গাছিরা।