বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান এমপি বলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার মহাপরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান উল্লেখ করে বলেন বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্নেল ফারুক ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ জিয়াউর রহমানের সাথে সাক্ষাত করে তারা বঙ্গবুন্ধকে হত্যার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। সবশুনে জিয়াউর রহমান বলেন, সিনিয়র অফিসারদের পক্ষে সম্ভব নয়, জুনিয়র অফিসার যারা আছে তারা এগিয়ে যাও। তিনি হুকুম দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করিয়েছেন। অথচ জিয়াউর রহমান সে সময় সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান ছিলেন। তার দায়িত্ব ছিলো বঙ্গবন্ধুকে সতর্ককরা, কোর্ট মার্শাল করে বিপদগামী সেনা অফিসারদের বিচার করা। তিনি তা না করে খুনীদেরকে মদদ দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন,আপনার সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য আপনাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। তাঁর কথা শুনে বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, ওরা আমার সন্তানের মত। ওরা আমাকে হত্যা করতে পারেনা। এতবড় বিশ্বাস ছিল সেনাবাহিনীর উপরে। কিন্তু সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছে হত্যার নায়ক জিয়াউর রহমান। অথচ বঙ্গবন্ধু এমনই একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী হয়েও বঙ্গভবনে না থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে থেকেছেন। বঙ্গভবনে থাকলে হয়তো এই হত্যাকান্ডের শিকার নাও হতে পারতেন। আওয়ামীলীগকে যারা ধ্বংস করতে চেয়েছে। তারা মনে করেন শিকড় উপরে ফেললে আওয়ামীলীগ ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু আওয়ামীলীগের শিকড় মাটিতে পতিত নয়, বাংলার মানুষের হৃদয়ের মধ্যে পতিত।বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন শেখ হাসিনা আছে বলেই আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালিত হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে শেখ হাসিনা নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নারীরা মর্যাদার সাথে দেশের উন্নয়ন কাজে অংশ নিতে পারছেন। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরী হয়েছে।খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশকে এগিয়ে নিতে আগামীতেও শেখ হাসিনা সরকারের বিকল্প নেই।আওয়ামীলীগ সেই দল নয়। অনেক রক্ত ও ত্যাগ তীতিক্ষার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া দল আওয়ামীলীগ। যারা দলের জন্য, মানুষের কল্যানের জন্য কাজ করেছেন আওয়ামীলীগ তাদেরকে মূল্যায়ন করবে। দলের শক্তি বৃদ্ধির জন্য এই সম্মেলন। এখানে প্রকৃত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ণ করা হবে। ১২ অক্টাবর বুধবার দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠ প্রাঙ্গণে দিনাজপুর পৌর ও সদর উপজেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান এমপি এসব কথা বলেন। সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইমদাদ সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বত্তব্য রাখেন দিনাজপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হোসনে আরা লুৎফা, সফুরা বেগম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী প্রমুখ। এর আগে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা ইনস্টিটিউটের মাঠে জড়ো হন। পরে দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন দিনাজপুরের স্থানীয় শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা। বিকাল ৪টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়। সাড়ে চারটায় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে।