ভাঙ্গায় শতাধিক বছরের ঐতিহ্যের নৌকা বাইচ এবারও হচ্ছে না। তবে বাইচ উপলক্ষে মেলা বসেছে কুমার নদের দুই পাড়ে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, হিন্দুদের বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে পূজার দিন শতাধিক বছর ধরে ভাঙ্গায় কুমার নদে নৌকা বাইচ হয়ে আসছে। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্বকর্মা পূজা। পূজা হলেও এ বছর বাইচ হচ্ছে না। এক সময় স্থানীয় পূজা কমিটির আয়োজনে ও ভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় এ বাইচ হতো।
১৯৯৭ সালে ভাঙ্গা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলে পৌরসভা সহযোগিতা করতো। ২০০৪ সালে প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় প্রথম বারের মতো বাইচ বন্ধ হয়। ৫ বছর বন্ধ থাকার পর ২০০৯ সালে পুনরায় বাইচ চালু হয়। ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর বাইচ হয়। ২০১৭ সলের পরে স্থানীয় রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় বাইচ দুই বছর বন্ধ থাকে। এরপর করোনা মহামারির কারনে ২০২০ ও ২০২১ সালে বন্ধ থাকে। ২০২২ সালে আয়োজক কমিটি উদ্যোগ না নেওয়ায় এবারও বাইচ হচ্ছে না।
ভাঙ্গা নাগরিক কমিটির সদস্য সুবাস মণ্ডল বলেন, ভাঙ্গার কুমার নদের নৌকা বাইচ ছিলো সর্বজনীন উৎসব। এ উপলক্ষে ফরিদপুরসহ আশেপাশের এলাকা থেকে লক্ষাধিক লোকের সমগম ঘটতো ভাঙ্গার কুমার নদের দুই পাড়ে। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে বাইচের নৌকা আসতো।
বাইচ না হলেও মেলা বসেছে কুমার নদের দুই পাড়ে। ভাঙ্গা বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বলেন, বাইচ হলে আমাদের বিক্রি অনেক বেশি হতো। আমরা বাইচের দিনের অপেক্ষায় থাকতাম। তারপরেও মেলা উপলক্ষে বিক্রি খারাপ না।
নওগাঁ জেলার রানীনগর থেকে শিশু খেলনা বিক্রি করতে এসেছেন আশিক শেখ। তিনি বলেন, ভাঙ্গার বাইচের মেলায় আমি ১০/১২ বছর ধরে আসি।
কুষ্টিয়া থেকে খই (পপকন) বিক্রি করতে আসা সলিম মিয়া বলেন, ভাঙ্গার নৌকা বাইচের মেলায় আমরা কুষ্টিয়া এলাকা থেকে কমপক্ষে ৫০ জন খই বিক্রি করতে এসেছি। আমরা প্রতি বছর এ মেলায় আসি। তবে বাইচ হলে আমাদের বিক্রি অনেক বেশি হয়।