বান্দরবানে বসতভিটার জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আপন ছেলে শাহ আলমকে হত্যার দায়ে পিতা মোজাফ্ফর আহম্মদসহ একই পরিবারের অপর তিনজন আসামি আরিফ উল্লাহ, আছমা সিদ্দিকা ও শাহনাজ বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর এ রায় দেন।
আজ সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে বারটায় বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ মোঃ ফজলে এলাহী ভূইয়া এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামী আরিফ উল্লাহ ও শাহনাজ বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং আসামি মোজাফ্ফর আহম্মদ ও আছমা ছিদ্দিকা পলাতক ছিলেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মোজাফ্ফর আহম্মদ (৬৫) ভিকটিমের পিতা, আরিফ উল্লাহ (৩৫) ভিকটিমের ভাই, আছমা সিদ্দিকা (২৮) ভাইয়ের স্ত্রী, তারা তিনজনই জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মন্ডল্যা ঘোনা এলাকার বাসিন্দা, এবং আসামি শাহনাজ বেগম (৩৭) ভিকটিমের বোন,সে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ তুলাতলী এলাকার মোঃ হোসেন প্রকাশ কালুর স্ত্রী।
বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান জানান, ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে বসতভিটা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে আসামিগণ দা, হাতুড়ি, লোহার রড ও গাছের লাঠি নিয়ে ভিকটিম শাহ আলমের বসত ঘরে প্রবেশ করে ভিকটিম শাহ আলমের মাথায় দা দিয়ে কোপ মারে এবং রড ও গাছের লাঠি দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম শাহ আলম মৃত্যুবরণ করে।পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী আরফাতুন্নেছা বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় বর্ণিত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাডভোকেট মোঃ ইকবাল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামিগণ বসতভিটা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে ভিকটিমকে হত্যা করে। এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় স্বাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আদালতের বিচারক আসামিগণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডাদেশ দেন।রায় পেয়ে মামলার বাদী ভিকটিমের স্ত্রী আরফাতুন্নেছা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।