ভারতের তামিলনাড়ু থেকে প্রেমের টানে বরিশালে এসে পথে-প্রান্তরে খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রেমিকাকে। শুধু একটি বার দেখা না করে বরিশাল ছাড়তে চাচ্ছেন না প্রেমকান্ত নামে ওই যুবক।
তিনি জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ড্যান্স দেখে প্রেমে মজেছে বাংলাদেশের বরগুনার তালতলী উপজেলার এক তরুণী। আর প্রেমকান্তের ভিডিওতে প্রতিনিয়ত লাইক কমেন্টও করতে থাকেন তিনি। এভাবে এক পর্যায়ে পরিচয় ও ভাবের আদান-প্রদান শুরু হয় তাদের। টানা তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কও এগিয়ে চলে।
প্রেমকান্তের দাবি, প্রেম শুধু মেয়ের সঙ্গেই নয়, সুসম্পর্ক হয়েছে দুই পরিবারের মাঝেই। আর তাই ভিডিও কলে নয় মনস্থির করেন ভালোবাসার মানুষটিকে সরাসরি একনজর দেখবেন প্রেমকান্ত।
তিনি আরো দাবি করেন, একনজর দেখার জন্য সুদূর ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বাংলাদেশের বরিশালে আসেন। কারণ বরিশালের একটি কলেজে ওই তরুণী পড়াশোনা করেন। বরিশালে আসার পর দেখাও মেলে ঐ তরুণীর সঙ্গে। এরপরই নতুন দিকে মোড় নেয় প্রেমকান্তের প্রেম।
নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা প্রেমকান্ত জানান, ২০১৯ সালে ফেসবুকে যে পরিচয়, এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক আরো গভীর হয়। এক পর্যায়ে উভয় পরিবারের মাঝেও গড়ে ওঠে সুন্দর একটি সম্পর্ক। করোনার বাঁধা কাটিয়ে প্রেমকান্ত বাংলাদেশ এলে ২৪ জুলাই বরিশালের একটি রেস্টুরেন্টে দুইজনের দেখা হয়। এর একদিন পর প্রেমকান্ত জানতে পারেন তার অজান্তেই চয়ন হালদার নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তার প্রেমিকার। আর এরপরই হঠাৎ প্রেমিকা ও তার পরিবার বন্ধ করে দেয় যোগাযোগ। শেষমেশ প্রেমিকার নতুন প্রেমিকের হাতে মারও খায় প্রেমকান্ত।
প্রেমকান্তের দাবি, তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয় টাকা। বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের হেফাজতেও থাকতে হয় তাকে।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, ঐ যুবক বৈধভাবে বাংলাদেশে আসে। তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় আনা হলে তিনি পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পরে ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঐ যুবককে গত পরশু সকালে ঢাকার গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি সেখান থেকে নিজ দায়িত্বে বিমানযোগে ভারতে চলে যাওয়ার কথা।
তিনি আরো জানান, যার সঙ্গে ওই যুবক তার সম্পর্কের কথা বলছেন তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক। বিষয়টি হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ঐ ছেলেকে বোঝান। এরপর তাকে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য বলেন, ছেলেটিও ভারতে চলে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করলে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।
জানা গেছে এতকিছুর পরেও প্রেমকান্তের বিশ্বাস দেখা হলে হয়তো আবারো তার জীবনে ফিরে আসবেন প্রেমিকা। তাই তামিলনাড়ুতে ফিরে যাওয়ার আগে একনজর প্রেমিকার দেখা পেতে চান প্রেমকান্ত।