ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি। দাপিয়ে বেড়িয়েছেন রাজনীতির মাঠ। তার পেছনে স্লোগানে মুখরিত থাকতেন নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক যেকোনো প্রোগ্রামে নেতাকর্মী নিয়ে হাজির হতেন সম্রাট।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধেও। চলে যান আত্মগোপনে।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া পাওয়া যায়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই দিন রাত পৌনে ৯টার দিকে সম্রাটকে কারাগারে নেওয়া হয়।
পরদিন ৭ অক্টোবর বিকেলে র্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় দুটি মামলা করেন। একটি অস্ত্র, আরেকটি মাদক মামলা। এরপর রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে সিআইডি। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকও মামলা করে।
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে একে একে চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন সম্রাট। সর্বশেষ বুধবার (১১ মে) ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত দুদকের দায়ের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিনের আদেশ দেন। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাঁধা নেই।
সম্রাটের আইনজীবী আফরোজা শাহানাজ পারভীন (হীরা)। গ্রেপ্তারের পর থেকে সম্রাটকে মুক্ত করতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সম্রাটের গ্রেপ্তারের পর এ আইনজীবীর কান্নার দৃশ্য গণমাধ্যমে উঠে আসে।
কারামুক্তির পর সম্রাট রাজনীতিতে ফিরবেন কিনা তা জানতে চাওয়া হয় আফরোজা শাহানাজ পারভীনের কাছে। তিনি বলেন, ‘শারীরিক কন্ডিশন, সার্বিক পরিস্থিতি সব কিছু মিলিয়ে তিনি (সম্রাট) সিদ্ধান্ত নেবেন রাজনীতিতে ফিরবেন কিনা। তবে বলতে পারি, উনি রাজনীতির মানুষ। রাজনীতি না করে বাঁচবেন না। আবার রাজনীতিতে কামব্যাক করবেন, ইনশা আল্লাহ। উনার টাকা পয়সার নেশা নেই। রাজনীতি করা তার নেশা। জনগণের সেবা করতে চান। সবকিছু মিলিয়ে তাকে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হোক।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার নেত্রী। তিনি যেন তাকে রাজনীতি করার সুযোগ দেন। তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে, সেগুলোয় আইনি লড়াইয়ে নির্দোষ প্রমাণ হয়ে তিনি রাজনীতিতে ফিরবেন। প্রধানমন্ত্রী যেন তার ওপর একটু দয়াশীল হন সেই প্রত্যাশা আমাদের। তিনি সারাটা জীবন আওয়ামী করেছেন এবং করেও যেতে চান।’